লিলুয়ায় খুনে গ্রেফতার অভিযোগকারী ভাই-ই

কিন্তু সেখানে সমস্যার কোনও সমাধান তো হয়ইনি, বরং দুই ভাইয়ের মধ্যে ফের মারামারি শুরু হয়। এই মারামারি দেখতে অফিসের সামনে প্রচুর ভিড় হয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ এই মারামারি চলেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

লিলুয়ার খুনের ঘটনায় এ বার অভিযোগকারীকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই ব্যক্তি খুনের কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম রবি বিশ্বাস। সম্পর্কে তিনি মৃত সনাতন বিশ্বাসের (৫৫) ছোট ভাই। পুলিশের দাবি, ছোট ভাই দাদাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে।

Advertisement

লিলুয়ার পঞ্চাননতলায় একটি বাড়ি থেকে ১৬ মে সনাতনের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। সনাতনরা চার ভাই। বড় ভাই আগেই মারা গিয়েছেন। বাকি তিন ভাই এক সঙ্গেই থাকতেন। সনাতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মত্ত অবস্থায় প্রায়ই মনোরোগী মেজ ভাই ষষ্ঠী বিশ্বাসকে মারধর করতেন। ঘটনার রাতে একই ভাবে দাদাকে মারধর করার সময়ে ছোট ভাই রবি সনাতনকে বাধা দেওয়ায় গোলমাল শুরু হয়।

অভিযোগ, এর পরে বেশি রাতে ওই পারিবারিক বিবাদের মীমাংসা করতে দুই ভাইকে বাড়ির কাছে ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে সমস্যার কোনও সমাধান তো হয়ইনি, বরং দুই ভাইয়ের মধ্যে ফের মারামারি শুরু হয়। এই মারামারি দেখতে অফিসের সামনে প্রচুর ভিড় হয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ এই মারামারি চলেছিল।

Advertisement

পরের দিন সকালে সনাতনের বাড়িতে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পেয়ে পাড়ার লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ প্রথমে ঘটনাটিকে মদ খেয়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে। পরে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পুলিশের হাতে আসার পরে খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়।

ঘটনার পরের রাতে সনাতনের ছোট ভাই রবি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। সেই অভিযোগে রবি জানিয়েছিলেন, তিনি ওই গোলমালে ছিলেন না। রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে শুয়ে পড়েছিলেন। গোলমাল, মারামারি হয়েছিল মেজ দাদা ষষ্ঠী বিশ্বাসের সঙ্গে। রবির এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ রাতেই মনোরোগী ষষ্ঠীকে থানায় নিয়ে এসে সারা রাত লক-আপে আটকে রেখে পরের দিন আদালতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু পরে ভুল বুঝতে পেরে আবার থানায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়াও হয়। এর মধ্যে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সনাতনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে জানতে পেরে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এর মধ্যে তদন্তের ভার হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কয়েক দিন তদন্ত চালানোর পরে এ দিন রবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কিন্তু প্রশ্ন হল, ঘটনার রাতে যখন ওয়ার্ড অফিসের সামনে মারপিট হয় তখন বহু মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনে রবি কী ভাবে তাঁর দাদাকে পিটিয়ে মারল? তখন কেউ বাধা দেননি কেন?

পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘তদন্তে জানা গিয়েছে ছোট ভাই রবিই সনাতনকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন করে। অভিযুক্ত ব্যক্তি খুনের কথা স্বীকারও করেছে। এর পিছনে আর কেউ ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন