ট্রাক-চালকদের বিক্ষোভে স্তব্ধ জাতীয় সড়ক

তোলার অভিযোগে পুলিশের চেকপোস্টে আগুন, অবরোধ

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাক চালকদের থেকে পুলিশ টাকা তোলে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে ট্রাক-মালিক সংগঠনের।

Advertisement

দীপঙ্কর দে

দাদপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০০:০১
Share:

জেরবার: রাস্তায় আটকে সারি সারি গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র

ট্রাক-চালকদের থেকে পুলিশের টাকা তোলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে হুগলির দাদপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ধুন্ধুমার বাধল। অবরোধ, চেকপোস্টে আগুন, পুলিশকর্মীদের লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়া— কিছুই বাদ রইল না। প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধের জেরে ওই জাতীয় সড়কে যানজটে হাঁসফাঁস অবস্থা হল। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশকে।

Advertisement

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাক চালকদের থেকে পুলিশ টাকা তোলে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে ট্রাক-মালিক সংগঠনের। অভিযোগ, এ দিন ভোরে দাদপুরের মহেশ্বরপুরে কলকাতামুখী বালি বোঝাই ট্রাক থেকে টাকা তোলা হচ্ছিল। কিন্তু কিছু ট্রাক-চালক টাকা দিতে অস্বীকার করেন। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা হয়। এর পরেই ক্ষিপ্ত ট্রাক-চালকেরা রাস্তায় নেমে পড়েন। সকাল ছ’টা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। রাস্তার মাঝে টায়ার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের চেকপোস্টে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, ওই চেকপোস্ট থেকেই টাকা তোলার কাজ চলে। অবরোধের জেরে শ’য়ে শ’য়ে ট্রাক সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। গুটিকতক পুলিশকর্মী বিক্ষোভকারীদের সামলাতে ব্যর্থ হন। পরে পুলিশের বড় বাহিনী এবং র‌্যাফ ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশ অবরোধ তোলার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের একাংশ তাদের লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়ে বলে অভিযোগ। এর পরে পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়। ততক্ষণে সকাল ন’টা বেজে গিয়েছে। পুলিশের দাবি, অবরোধকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে দুই পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। পক্ষান্তরে, পুলিশের লাঠিতে দুই ট্রাক-চালক আহত হন বলে অবরোধকারীদের অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য লাঠি চালানোর কথা মানেনি।

Advertisement

হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই চেকপোস্টে ঠিক কী হতো, তা-ও দেখা হবে।’’

গোটা ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ট্রাক-মালিক সংগঠনের কর্তারা। ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটার্স অ্যাসোসিয়েশন’ তথা হুগলি জেলার ট্রাক-মালিক সংগঠনের কর্তা প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশের ডাকবাবু আর মোটরযান দফতরের কর্মীদের অত্যাচারে আমরা জর্জরিত। এই জুলুমের কথা বহুবার প্রশাসনিক দফতরে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে পর্যন্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির হেরফের হয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বহু ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই গাড়ি থেকে টাকা নিয়ে পুলিশ ছেড়ে দেয়। তার ফলে রাস্তা খারাপ হয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন