টহল: ঘটনার পর এলাকায় নজরদারি পুলিশের। নিজস্ব চিত্র
ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এক গ্রামবাসীর বাড়ি ভাঙচুর করে তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ১৮ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে খালি হাতে ফিরে আসতে হল পুলিশকে। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের ছোড়া ইটের ঢেলায় আহত হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শ্যামপুরের বাড়গড়চুমুক গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে ওয়াকফ সম্পত্তির দখলদারি ঘিরে আলাউদ্দিন মুন্সির সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশীদের বিবাদ চলছে গত কয়েক বছর ধরে। আলাউদ্দিনের অভিযোগ, কয়েকজন গ্রামবাসী সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। তাঁর স্ত্রীকে মারধর করে। আলাউদ্দিন মুন্সি শ্যামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। প্রধান অভিযুক্ত লাল্টু মুন্সি-সহ মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান আলাউদ্দিন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রবিবার রাত ১০টা নাগাদ গ্রামে লাল্টু-সহ ১৮ জনকে ধরার জন্য অভিযান চালায়। দু’জনকে পুলিশ ধরে গাড়িতে বসিয়েও রাখে।
বাকিদের ধরতে যাওয়ার সময়ে লাল্টু ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার শুরু করে দেয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বাকি অভিযুক্তদের সংগঠিত করে সে পুলিশের উপরে ইট ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ হতভম্ব হয়ে যায়। সেই সুযোগে যে দু’জনকে পুলিশ ধরেছিল তারা পালিয়ে যায়। গ্রাম ছেড়ে চম্পট দেয় লাল্টু-সহ বাকিরাও। ইটের ঘায়ে একজন পুলিশকর্মী আহত হন। অল্পবিস্তর আঘাত লাগে আরও চার পুলিশকর্মীর। একটি মোটরবাইক ভেঙে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে শ্যামপুর থানার পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে রাতেই হানা দেন। তবে কোনও অভিযুক্তকেই পুলিশ ধরতে পারেনি। সোমবারও দিনভর গ্রামে দফায় দফায় অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ১৮ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশকে মারধর করার জন্য মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরার জন্য তল্লাশি চলছে। কাউকে ছাড়া হবে না। আলাউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরাই এই ওয়াকফ সম্পত্তির স্বীকৃত অংশীদার। অথচ অভিযুক্তরা অন্যায়ভাবে আমার কাছ থেকে এই সম্পত্তির দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। পরিবারের উপরে অত্যাচার করছে।’’ লাল্টু মুন্সি-সহ ১৮ জন অবশ্য পলাতক।