ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে ডোমজুড়ের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল হাওড়া গ্রামীণ থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ওই সেন্টারের আল্ট্রাসোনোগ্রাফির একটি যন্ত্র এবং কয়েকটি কম্পিউটার। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক অভিযুক্ত বিশ্বনাথ সাহা ও চিকিৎসক সুদীপ্ত সাহা অবশ্য আপাতত জামিনে মুক্ত। খুব শীঘ্র এই মামলার মূল শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনাটি আদতে ২০১৭ সালের। বেশ কয়েকদিন ধরে পেটের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন ডোমজুড়ের হাজিপাড়ার বাসিন্দা আমিনা বেগম। চিকিৎসকের পরামর্শমতো আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করানো হয় ডোমজুড়ের ফোকোর দোকানের সামনের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে। মহিলার স্বামী শেখ মুস্তাক আহমেদের দাবি, রিপোর্টে জানানো হয় গলব্লাডারে পাথর জমেছে। সেইমতো অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুতি নেন তিনি। কিন্তু কয়েকদিন পরে পেটের যন্ত্রণা কমে যায় আমিনার। সন্দেহ হওয়ার ফের আন্দুলের কাছে আড়গোড়ির অন্য একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করানো হয়। সেই রিপোর্টে দেখা যায় সব কিছু স্বাভাবিক। এরপরই শেখ মুস্তাক থানায় ডোমজুড়ের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলা চলাকালীন তদন্তের স্বার্থে হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে আমিনার আরও দু’বার পেটে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করানো হয়। কিন্তু প্রতি বারই রিপোর্ট আসে গলব্লাডারের অবস্থা স্বাভাবিক। এরপরই পুলিশ অভিযুক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বিশ্বনাথ সাহা এবং যিনি রিপোর্ট দিয়েছিলেন সেই চিকিৎসক সুদীপ্ত সাহার বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু করে।
মুস্তাকের অভিযোগ, ‘‘ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে যদি স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করালে তো বড় ক্ষতি হয়ে যেত। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে যাতে আর কেউ না প্রতারিত হন, তাই পুলিশে অভিযোগ করেছিলাম।’’
অবশ্য এমন অভিযোগের পরও অবশ্য দিব্যি চলছে সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। মালিক বিশ্বনাথবাবু হেসে বললেন, ‘‘পুলিশ তো একটি যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। আমাদের ওরকম অনেক যন্ত্র আছে। ফলে অসুবিধা হচ্ছে না।’’ আর অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, ‘‘আমাদের রিপোর্ট ঠিকই ছিল। কয়েকদিন পরে হয়তো পাথরটি মিলিয়ে গিয়েছে।’’