লাগাম পরাতে হুগলিতে প্রচারে জোর পুলিশের
Cracker

আতসবাজির ধোঁয়াতেও বিষ

চিকিৎসক এবং পরিবেশবিদেরা বলছেন, করোনা সংক্রমিতদের তো বটেই, যাঁরা সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন, তাঁদের শরীরের পক্ষেও বাজির ধোঁয়া মারাত্মক ক্ষতিকর।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৫৪
Share:

তৈরি হচ্ছে আতসবাজি। রবিববার চণ্ডীতলায়। ছবি: দীপঙ্কর দে

কালীপুজো দোরগোড়ায়। শব্দবাজির উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু আতসবাজির ক্ষেত্রে কিছু ছাড় রয়েছে। কিন্তু এ বারে করোনা পরিস্থিতিতে সেই বাজি পোড়ানোতেও লাগাম পরাতে চাইছে হুগলির পুলিশ প্রশাসন। যাতে বাজির ধোঁয়ায় বাতাসের দূষণ না বাড়ে।

Advertisement

চিকিৎসক এবং পরিবেশবিদেরা বলছেন, করোনা সংক্রমিতদের তো বটেই, যাঁরা সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন, তাঁদের শরীরের পক্ষেও বাজির ধোঁয়া মারাত্মক ক্ষতিকর। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৮০ শতাংশেরও বেশি সংক্রমিতের এখন বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে। লাগামছাড়া আতসবাজি পোড়ানো হলে সেই ধোঁয়ায় বাতাসে দূষণ বাড়বে। অক্সিজেনের মাত্রা কমবে। তাতে সংক্রমিতেরা বিপদে পড়বেন। তাই চিকিৎসক এবং পরিবেশবিদদের বেশিরভাগেরই অভিমত, বাজি পোড়ানো থেকে মানুষকে যত বিরত রাখা যায়, ততই মঙ্গল।

তাই কোমর বেঁধে নামছে হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ এবং চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটও। জোর দিয়েছে প্রচারে। বাজির বিরুদ্ধে প্রচারে ভিডিয়ো প্রকাশ, সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন থানা এলাকায় মাইকে প্রচার, লিফলেট বিলিও থাকছে। তার সঙ্গেই করোনা আবহে বাজি পোড়ানোর ক্ষতিকর দিকগুলো প্রচারে সামনে আনতে পুলিশ পরিবেশকর্মীদেরও কাজে লাগাতে চাইছে।

Advertisement

জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার আমনদীপ সিংহ বলেন, ‘‘বাজি পোড়ানো রুখতে প্রচারে ছোট ছোট ভিডিয়ো দেখানো হবে। কিছু গাড়ি রাখছি। মানুষকে বাজির বিরুদ্ধে সচেতন করতে আমাদের চেষ্টা থাকবে।’’ চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান চলছেই। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। তাই বদলে যাওয়া আবহে আমরা চাইছি যে কোনও ধরনের বাজিই যতটা সম্ভব কম পুড়ুক। তাতে মানুষ স্বস্তি পাবেন। প্রচারপত্র বিলির সঙ্গে আমরা পরিবেশের কাজে যুক্ত এমন মানুষজনকে কাজে লাগাতে চাইছি। প্রচারে ব্যানার-পোস্টার থাকছেই। পুলিশের তরফে সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে চাইছি।’’

জেলার বিশিষ্ট চিকিৎসক কৌশিক মুন্সি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন সুস্থ। অতিমারিতে আতসবাজির ক্ষতিকর দিক নিয়ে তিনি সতর্ক করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা ভুগছেন বা যাঁরা সেরে উঠেছেন, বাজির ধোঁয়া তাঁদের কাছে বিষের মতো। এ বার বাজি পোড়ানো এড়িয়ে চলাই ভাল। না হলে বাড়িতে যাঁদের চিকিৎসা চলছে, তাঁরা সমস্যায় পড়বেন। বাতাসে হিমেল ভাব এসেছে। বাজি পুড়লে বাতাসে অক্সিজেন কমবে। দূষণের মাত্রা বাড়বে। যা রোগীকে ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে ঠেলে দেবে।’’

উত্তরপাড়ার পরিবেশকর্মী শশাঙ্ক করের গলাতেও এক সুর। তিনি বলেন, ‘‘আতসবাজির ধোঁয়াও ক্ষতিকর। করোনার ক্ষেত্রে মানুষের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মক কমে যায়। তাই আমরা চাইছি এ বার পুলিশ, প্রশাসন শুধু শব্দবাজি আটক করেই দায়িত্ব সারলে চলবে না। মানুষকে এ বার পুরোপুরি সব ধরনের বাজি পোড়ানো থেকে যতটা সম্ভব সরিয়ে রাখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন