দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকারের মধ্যে থেকে বের করে আনা হচ্ছে চালককে। ছবি: সুব্রত জানা।
স্কুল যাওয়ার পথে পুলকার দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হল চালক-সহ ৭ জন ছাত্রছাত্রী।
সোমবার সকালে উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে বাণীতবলা চেকপোষ্টের কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত পড়ুয়ারা একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের। পুলকারের চালককে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহত ছাত্রছাত্রীদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা। তবে দুর্ঘটনার জেরে ওই পড়ুয়ারা রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বাউড়িয়া এলাকা থেকে জনা ১৮ ছাত্রছাত্রী নিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে স্কুলে যাচ্ছিল পুলকারটি। বাণীতবলা চেকপোষ্টের কাছে বীরশিবপুর–শ্রীরামপুর রুটের একটি বাস যাত্রী নামাচ্ছিল। বাসটির বেশ কিছুটা পিছনে ছিল পুলকারটি। সেই সময় হঠাৎই পুলকারটিকে ওভারটেক করে একটি ম্যাটাডর এগিয়ে যায়। কিন্তু বাসটিকে সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ম্যাটাডরটি আচমকা ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ে। তার ফলে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে পুলকারটি সোজা ম্যাটাডরের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কার চোটে গাড়ির মধ্যে একে অন্যের উপর পড়ে যায় পড়ুয়ারা। এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘ড্রাইভারকাকু ভালই চালাচ্ছিল। হঠাৎ সামনে একটি গাড়ি এসে পড়ায় আমাদের গাড়িটা তার পিছনে খুব জোরে ধাক্কা মারলে সবাই এ ওর ঘাড়ে ছিটকে পড়ি। আমার মাথা সামনে সিটে খুব জোরে ঠুকে যায়। প্রচণ্ড ব্যথা করছিল। ড্রাইভার কাকুরও খুব লেগেছে। রক্ত বেরোচ্ছিল।’’
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে পুলকারের সামনের অংশ। তারই মধ্যে আটকে আছেন চালক। পুলিশ এসে লোকজনের সাহায্যে তাঁকে গাড়ি থেকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জখম ছাত্রছাত্রীদের। খবর দেওয়া হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের। স্কুলের তরফে প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা সকলেই সুস্থ আছে। অনেকে ক্লাসও করেছে। আপাতত কোনও সমস্যা নেই।’’ তবে পুলকারটি ভাড়ার গাড়ি ছিল বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রের অবিভাবক বলেন, ‘‘সাতটা নাগাদ ছেলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আটটা নাগাদ হঠাৎই পুলিশের ফোন পেয়ে আসি। এমনিতেই মুম্বই রোডে যাতায়াতের জন্য চিন্তায় থাকি। যা ঘটল তাতে চিন্তা আরও বেড়ে গেল।’’ তবে একই সঙ্গে গাদাগাদি করে পুলকারে ছাত্রছাত্রী নিয়ে যাওয়া নিয়েও ক্ষোভ জানান ওই অভিভাবক। তাঁর অভিযোগ, যে ভাবে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পড়ুয়া নিয়ে যায় পুলকারগুলি তাতে কিছু হলে ছাত্রছাত্রীদের আঘাত পাওয়ার প্রচণ্ড সম্ভাবনা থাকে।