ধুঁকছে পশু হাসপাতাল, মানছেন জেলা কর্তারাও

আরামবাগ মহকুমার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপর আরামবাগ পুরসভা এলাকা ছাড়াও পাশাপাশি বহু গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ গবাদি পশুর জন্য নির্ভরশীল।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০১:৫১
Share:

তালাবন্ধ: সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই পশু নিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন অনেকে। ছবি: মোহন দাস

ওষুধ নেই। প্রয়োজনীয় কর্মী নেই। সম্প্রতি আবার চিকিৎসকও নেই। দৈনন্দিন ন্যূনতম পরিষেবাটুকু দিচ্ছেন ফার্মাসিস্ট। আরামবাগ মহকুমা পশু হাসপাতালের হাল এমনই। ফলে গবাদি পশুর রোগ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন এলাকার মানুষ। হাসপাতালটির দুরবস্থার কথা স্বীকার করে জেলা প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘শুধু হুগলি নয়। সারা রাজ্য জুড়েই প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরে কর্মী নেই, ওষুধ নেই। শুধু মুরগির ছানা বিলি চলছে। আর টিকার জন্য গ্রামে গ্রামে শিবির করতে বলা হচ্ছে।”

Advertisement

আরামবাগ মহকুমার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপর আরামবাগ পুরসভা এলাকা ছাড়াও পাশাপাশি বহু গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ গবাদি পশুর জন্য নির্ভরশীল। অথচ এমন হাসপাতালে পরিকাঠামোর কোনও বালাই নেই। যেমন জটিল অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা থাকলেও কোনও অন্তর্বিভাগ নেই। অস্ত্রোপচারের পর ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে হয় পশুদের। অথবা গুরুতর অসুস্থ কোনও পশুকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্সেরও ব্যবস্থা নেই। সবথেকে বড় সঙ্কট ওষুধ নিয়ে। অভিযোগ, ৪৫ রকম প্রয়োজনীয় ওষুধের মধ্যে জোগান রয়েছে সাধারণ দশ রকমের ওষুধের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে ওষুধ হাসপাতালে থেকে বিনামূল্যে পাওয়ার কথায় সেগুলোই টাকা দিয়ে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

হাসপাতালের চিকিৎসক কমল সিংহ অসুস্থতার জন্য ছুটিতে রয়েছে। ফলে আপাতত হাসপাতালের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন স্থানীয় ডোঙ্গলের প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক আশিষতরু মুখোপাধ্যায়। তিনি নিজের কেন্দ্র সামলে কোনও মতে কয়েক ঘন্টা সময় দিতে পারেন সপ্তাহের দুটো দিন-মঙ্গলবার এবং শুক্রবার। অথচ গড়ে প্রতিদিন হাঁস, মুরগি, ছাগল, কুকুর, গরু মিলিয়ে একশো প্রাণীর চিকিৎসা করতে হয়। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় ফিরে যেতে হয় অনেককেই। যে দিন চিকিৎসক থাকেন না, পরিস্থিতি সামাল দেন ফার্মাসিস্ট কার্তিক দে। স্থানীয় এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘চিকিৎসক না দেখলে চিকিৎসা ঠিক হচ্ছে কি না বুঝব কী করে?’’

Advertisement

সমস্যা মানছেন চিকিৎসক আশিসতরুবাবুও। বলেন, ‘‘এখানকার চিকিৎসক না থাকায় আমিই পরিস্থিতি সামলাচ্ছি। ওষুধের সমস্যাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। আশা করি, জুলাই মাসের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন