সংশোধনাগারে দেহ মিলল বন্দির

পুুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডানকুনি রঘুনাথপুর কালিয়াচকের বাসিন্দা অষ্ট ডাকাতির অভিযোগে গত ১৬ই জুন গ্রেফতার হয়। এরপর শ্রীরামপুর আদালতে তাকে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০১:৫৪
Share:

সংশোধনাগারের মধ্যে দেহ মিলল এক বিচারাধীন বন্দির। মঙ্গলবার বিকেলে চুঁচুড়ার হুগলি সংশোধনাগারের অষ্ট মণ্ডল(৫০) নামে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ মেলে।

Advertisement

পুুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডানকুনি রঘুনাথপুর কালিয়াচকের বাসিন্দা অষ্ট ডাকাতির অভিযোগে গত ১৬ই জুন গ্রেফতার হয়। এরপর শ্রীরামপুর আদালতে তাকে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ওইদিনই তাকে চুঁচুড়ার হুগলি সংশোধনাগারে আনা হয়। এরপর থেকে সে জেল হেফাজতেই ছিল।

সম্প্রতি চুঁচুড়া আদালতের আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে বিচারাধীন বন্দিদের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় জেলে বন্দির সংখ্যা বেড়ে চলছে। হুগলি জেলে পুরুষ, মহিলা-সহ ৪৪৪ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮০ তে।

Advertisement

ফলে জেলের বন্দিদের থাকার স্থান সঙ্কুলান নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ উঠছে। জেল কর্তৃপক্ষ অবশেষে পঞ্চাশোর্ধ্ব বিচারাধীন বন্দিদের জন্য সংশোধনাগারের দোতলায় থাকার বন্দোবস্ত করেছিল। অষ্টও থাকত সেখানেই।

মঙ্গলবার দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর তাকে দেখতে না পেয়ে অন্য বন্দিরা খোঁজ শুরু করে। তারপরেই দোতলার সিঁড়ির গ্রিল থেকে গলায় ফাঁস লাগা অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার হয়। অন্য বন্দিরা জেল কর্তৃপক্ষকে জানালে ঘটনাস্থল আসে সংশোধনাগারের চিকিৎসক। তিনি অষ্টকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর সংশোধনাগারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জেল কর্তৃপক্ষের তরফে এরপর মৃত বন্দির পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্য্যন্ত মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে জেলে কেউ আসেননি। কী কারণে এমন ঘটনার তার তদন্তও শুরু হয়েছে।

জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, আইনজীবীদের কর্মবিরতির ফলে জেলে বন্দির সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে বাড়তে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া যে সকল বন্দির জামিনে মুক্ত হওয়ার কথা ছিল, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ার তারা জেলবন্দিই থেকে গিয়েছে। ২০১৬ সালে এক দুষ্কৃতীকে হুগলি জেলে না পাঠিয়ে অন্য জায়াগায় স্থানান্তরিত করায় জেলের মধ্যে বিচারাধীন বন্দিরা আগুন ধরিয়ে দেয়। যথেচ্ছ ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। বন্দিদের মারে গুরুতর জখম হয়েছিলেন এক জেলকর্মী। এরপর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ জেলা সংশোধনাগারে একের পর এই ধরনের ঘটনা জেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, জেলের জায়গা অনুপাতে বন্দি-সংখ্যা বৃদ্ধি, চিন্তার কারণ তো বটেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন