বাবুল সুপ্রিয়।
শাসকদলের এক নেতার ‘আস্ফালনে’ শ্রীরামপুরের একটি পুজোর উদ্বোধন থেকে বাদ গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়!
এমনই একটি অভিযোগকে ঘিরে শ্রীরামপুরে রাজনৈতিক কাজিয়া তুঙ্গে উঠেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট পুজো উদ্যোক্তারা। শেষমেশ কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাকে দিয়েই উদ্বোধন করানো হবে না বলে তাঁরা স্থির করেছেন। ক্ষুব্ধ বিজেপি শিবির।
আজ, চতুর্থীর সন্ধ্যায় শ্রীরামপুরের মাহেশ নেহরুনগর সর্বজনীনের পুজোর উদ্বোধন করার কথা ছিল বাবুলের। তাঁর আসার বিষয়টি মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তা ভাল ভাবে নেননি শাসকদল। অভিযোগ, তৃণমূলের এক নেতা এ নিয়ে আসরে নামেন। তাঁর হুমকিতেই গোটা পরিস্থিতি বদলে যায়। বাবুলকে আনার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। জেলা বিজেপি সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্যের মাধ্যমে বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন পুজোর কর্মকর্তারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভাস্করবাবুকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়।
পুজো কমিটির অন্যতম সম্পাদক মানিক দে এবং পার্থ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বাবুল সুপ্রিয় এলে রাজনৈতিক কলহ হতে পারে বলে আমাদের কাছে খবর আসছিল। এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষার কথা ভেবেই মন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে।’’
বাবুলের ছেলেবেলা কেটেছে হুগলিরই উত্তরপাড়ায়। তিনি শ্রীরামপুর কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। তাঁর পুজোর উদ্বোধন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিজেপির অন্দরে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। শনিবার বিকেলে কলকাতায় জেলা বিজেপি দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বাবুল জনপ্রিয় শিল্পী। ওঁর যাওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ ছিল। কিন্তু হঠাৎ তৃণমূলের তরফে বলা হয়, বাবুলকে আনা চলবে না।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ওই পুজোর সঙ্গে যুক্ত, পুরসভার এক ঠিকাদারকে হুমকি দেওয়া হয়, উদ্বোধনে বাবুল এলে তাঁর বরাত এবং বিল আটকে দেওয়া হবে। তাই বাবুল এলে যে তাঁর পক্ষে থাকা সম্ভব নয়, সে কথা ঠিকাদার ভয়ে ভয়ে উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেন। শেষে চিঠি লিখে দুঃখপ্রকাশ করে পুজোকর্তারা বাবুলের কর্মসূচি বাতিল করান। দিলীপবাবুর ক্ষোভ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতি কোথায় পৌঁছেছে! শান্তিতে পুজো করা যাবে না, যদি তৃণমূল ছাড়পত্র না দেয়।’’
কী বলছে তৃণমূল?
জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কারও কোনও অনুষ্ঠানে আসার ব্যাপারে আমাদের ছুৎমার্গ নেই। তবে এক শ্রেণির মানুষ উৎসবে অশান্তি করতে চাইছেন। আমরা তাঁদের থেকে সতর্ক থাকছি। কেউ কারও আসা আটকে দিয়েছে এমনটা যাঁরা বলছেন, তাঁরাই এর উৎস বলতে পারবেন।’’