ফের দুর্ঘটনায় মৃত্যু অহল্যাবাঈ রোডে

যান শাসন নিয়ে প্রশ্ন

এক দিকে প্রচার চলছে জোরকদমে। অন্য দিকে অব্যাহত মৃত্যুর মিছিল। হুগলির বিভিন্ন রাস্তায় দুর্ঘটনা এবং তার জেরে প্রাণহানি লেগেই রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৯
Share:

এক দিকে প্রচার চলছে জোরকদমে। অন্য দিকে অব্যাহত মৃত্যুর মিছিল। হুগলির বিভিন্ন রাস্তায় দুর্ঘটনা এবং তার জেরে প্রাণহানি লেগেই রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে চণ্ডীতলায় অহল্যাবাঈ রোডে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক পথচারীর। মৃতের নাম শেখ ফরিদ (৪২)।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর লাগাতর প্রচারের পরেও দুর্ঘটনা না কমায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ-প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রকৃত যান শাসন দূরঅস্ত, শুধু প্রচার করেই দায় সারছে পুলিশ। ফলে দুর্ঘটনাও কমছে না।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ফরিদের বাড়ি চণ্ডীত‌লার গরলগাছায়। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ তিনি চণ্ডীত‌লা বাজার থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন‌। গরলগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে একটি গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মেরে পালায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

অহল্যাবাঈ রোড হুগলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কলকাতার সঙ্গে আরামবাগ, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার যোগাযোগের উপায়। কিছু দিন আগে রাজ্য সড়কটি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু তাতে সুফল মেলার পরিবর্তে দুর্ঘটনা বেড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। তাঁদের যুক্তি, বেশ কিছু দিন ধরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ওভারলোডের কারণে ট্রাক ধরে জরিমানা করা হচ্ছে। সেই কারণে ওই রাস্তা এড়িয়ে কলকাতামুখি বহু ট্রাক চাঁপাডাঙা হয়ে অহল্যাবাঈ রোডে ঢুকে পড়ছে। অভিযোগ, গাড়িগুলি বেপরোয়া গতিতে চ‌লে। তা ছাড়া রাস্তার দু’ধারে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। কলকাতায় দিনের বেলা ট্রাক ঢোকার বিধিনিষেধ রয়েছে। সেই কারণে সারাদিন দাঁড়িয়ে থেকে রাত ৯টার পরে ওই সব ট্রাক কলকাতার দিকে রওনা হয়।

বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এই রাস্তার উপরে বেশ কয়েকটি বড় বাজার আছে। রয়েছে স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, প্রশাসনিক দফতর। কিন্তু যানবাহন চলাচলে কোনও শৃঙ্খলা নেই। প্রশাসনেরও নিয়ন্ত্রণ নেই।

সম্প্রতি ওভারলোডিং বন্ধ করা নিয়ে চুঁচুড়ায় জেলা প্রশাসনের তরফে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে অহল্যাবাঈ রোডের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে ভারী ট্রাকের ভার ডানকুনি উড়ালপুল কতটা বহন করতে সক্ষম সেই প্রশ্নও ওঠে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, ওভারলোডিং বন্ধ এবং যান চলাচলে শৃঙ্খ‌লা আনতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য জেলা থেকে হুগলিতে ঢোকার মুখে তল্লাশি চালানো হবে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনার পরে চণ্ডীত‌লা থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য সুরজিৎ মণ্ডল দুর্ঘটনা রোধে চণ্ডীতলার কালীপুরে চেকপোস্ট তৈরির আর্জি জানিয়ে পুলিশকে চিঠি দেন। তিনি বলেন, ‘‘এই রাস্তায় যে হারে দুর্ঘটনা বাড়ছে, তা উদ্বেগের। জনবহুল এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। ওভারলোডিংয়ের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, অহল্যাবাঈ রোডে দুর্ঘটনা রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন