চুঁচুড়া হাসপাতালে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে বিদ্যুতের তার। — তাপস ঘোষ
আমরি কাণ্ডের পরে নিরাপত্তা ঢেলে সাজা হয়েছিল হুগলি জেলা সদর হাসপাতালকে। আগুন লাগলে যাতে রোগীদের দ্রুত বের করে নিয়ে আসা যায়, সে জন্য হাসপাতালের প্রতি তলের সঙ্গে বাইরের দিক থেকে যোগাযোগকারী লোহার সিঁড়ি তৈরি করা হয়। অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রগুলিকে সচল রাখতে প্রতিনিয়ত নজরদারি চালানো হয়।
এত কিছুর পরেও গত বছর ১ নভেম্বর হাসপাতালের তিন তলায় একটি গুদাম ঘরে কম্পিউটারে আগুন লাগে। সেখানে রাখা নতুন শয্যা, কিছু ওষুধ ও প্রয়োজনীয় নথি সবই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হাসপাতালের কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানলার কাচ ভেঙে ভিতরে ঢুকে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের পাঁচ নিরাপত্ত কর্মী গুরুতর জখম হয়েছিলেন।
শর্টসার্কিট থেকে ওই আগুন লাগে বলে জানা যায়। তার পরেও এখনও হাসাপাতাল চত্বর জুড়ে বৈদ্যুতিক তার বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দরজা দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়বে তার ঝুলছে। আবার এক তলায় মেল সার্জিকাল ওয়ার্ডে ঢোকার মুখেই বাঁ দিকের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মিটার বক্সগুলি। পাশেই রয়েছে অপারেশন থিয়েটার। একতলাতেই রয়েছে হাসাপাতাল সুপারের অফিস। তার আগেই সরু অন্ধকারাচ্ছন্ন গলি দিয়ে এগিয়ে গেলেই পড়বে রান্নাঘর। অথচ রান্নাঘরে কোনও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা হয়নি। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরেও সতর্ক হয়নি চুঁচুড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যে কোনও এখানেও শর্টসার্কিট থেকে বা রান্নাঘর থেকে মিটারবক্সে আগুন লাগতে পারে বলে আশঙ্কা রোগীর পরিজনদের। এ ছাড়া হাসপাতালে বহু এসি যন্ত্র রয়েছে। সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অভাব আছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের সুপার উজ্জলেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ডের মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে পুরনো এসি যন্ত্রগুলি বদলানোর কাজ শুরু হয়েছে। একটি যন্ত্র যাতে বেশিক্ষণ না চলে সে জন্য আলাদা মেশিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যে কোনও দুর্ঘটনা এড়াতে হাসপাতালের জরুরি দরজার সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, হাসপাতালের প্রত্যেক বিভাগ মিলিয়ে মোট ৮০টি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রয়েছে। তা আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। উপযুক্ত সময় ঠিকমতো ব্যবহারের জন্য হাসপাতালকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।