ফের ট্রেন অবরোধ হরিপালে, দুর্ভোগ যাত্রীদের

সিঙ্গুর এবং হরিপাল লোকালের যাত্রাপথ তারকেশ্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার ফের অবরোধ করলেন নিত্যযাত্রীরা। ওই দুই স্টেশন থেকে ট্রেনের সূচি অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে শনিবারও রেল অবরোধ হয়েছিল। এ দিন হরিপালের পাশাপাশি সিঙ্গুরেও অবরোধ হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৫ ০২:১৮
Share:

অবরোধ সিঙ্গুরে।

সিঙ্গুর এবং হরিপাল লোকালের যাত্রাপথ তারকেশ্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার ফের অবরোধ করলেন নিত্যযাত্রীরা।

Advertisement

ওই দুই স্টেশন থেকে ট্রেনের সূচি অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে শনিবারও রেল অবরোধ হয়েছিল। এ দিন হরিপালের পাশাপাশি সিঙ্গুরেও অবরোধ হয়। বেশ কয়েক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। সপ্তাহের প্রথম দিন অফিসের ব্যস্ত সময়ে অবরোধে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন রেলযাত্রীরা।

অবরোধ চলাকালীন আন্দোলনকারীদের তরফে কয়েকজন হাওড়ায় ডিআরএমের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। ডিআরএম আন্দোলনকারীদের জানান, শ্রাবণী মেলায় ভিড় সামাল দিতেই এক মাস দুপুর এবং সন্ধ্যায় ট্রেনের যাত্রাপথ বাড়ানো হচ্ছে। সকালের ট্রেনগুলি অবশ্য পূরনো সূচি অনুযায়ীই চলবে। যদিও গ্রামবাসীরা জানান, মেলার পরেও সব ট্রেন পুরনো সূচি অনুযায়ী না চললে আরও বড় আন্দোলন হবে।

Advertisement

এ দিন সিঙ্গুরে অবরোধ হয় ৮টা ১০ মিনিট নাগাদ। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ চলে। হরিপালে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত অবরোধ চলে। দুই জায়গাতেই আপের একটি লাইনে অবরোধ করা হয়। তাতে যাত্রীদের হয়রানি অবশ্য কমেনি। হরিপাল স্টেশনে তারকেশ্বরগামী ট্রেন যে লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছিল, সেখানে প্ল্যাটফর্ম না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে ওঠানামা করছিলেন যাত্রীরা। এ ভাবে নামাওঠায় সমস্যায় পড়েন মহিলা এবং বয়স্করা।

হরিপাল স্টেশনে ঝুঁকি নিয়ে নামা-ওঠা যাত্রীদের।

মৌসুমী কোলে নামে এক তরুণীর বক্তব্য, ‘‘ওদের আন্দোলনে যুক্তি রয়েছে। কিন্তু তাতে অন্যরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন কেন!’’ স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আন্দোলনের নিশ্চয়ই যুক্তি রয়েছে। কিন্তু পদ্ধতিটা ভেবে দেখা দরকার। আমাদের স্কুলের এক শিক্ষক ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পায়ে চোট পেয়েছেন।’’

শনিবার থেকে সিঙ্গুর এবং হরিপাল থেকে হাওড়া লোকাল তারকেশ্বর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় পূর্ব রেল। ওই দুই জায়গার নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ওই সিদ্ধােন্ত ট্রেন বাড়তি দূরত্ব যাওয়ায় তাঁদের অনেকটা সময় নষ্ট হবে। ভিড়ে ট্রেনে ওঠানামায় সমস্যা হবে। সকালে দুই স্টেশন থেকেই প্রচুর চাষি ট্রেনে হাওড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় যান। সব্জি নিয়ে ট্রেনে উঠতে অসুবিধায় পড়বেন তাঁরা।

নিত্যযাত্রীরা জানান, বর্তমানে হরিপাল স্টেশন থেকে হাওড়ায় দু’টি ট্রেন ছাড়ে। একটি সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ। অন্যটি দুপুর সওয়া তিনটে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুর-হাওড়া আন্দোলন লোকাল চালু করেন। মন্ত্রী তথা হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার বক্তব্য, ‘‘আন্দোলন লোকালের সঙ্গে সিঙ্গুর আন্দোলনের স্মৃতি জড়িত। গত ৩৯ বছর ধরে হরিপাল লোকাল চলে। এর সঙ্গে মানুষের আবেগ জড়িত। জনপ্রতিনিধি হিসেবে রেলকে আবেদন জানিয়েছি, এমন সিদ্ধান্ত নেবেন না যাতে মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগে। প্রয়োজনে়া দু’টি আরামবাগ লোকাল বাড়িয়ে দিন!’’

ছবি: দীপঙ্কর দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন