ধর্ষণ মামলায় সরকারি আইনজীবী সঠিক পরামর্শ দেননি। অভিযোগ নির্যাতিতার।
একটি ধর্ষণ মামলার শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে অনাস্থার কথা জানিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। তার জেরে শুনানি স্থগিত তো হলই, সরকারি আইনজীবীও মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন।
সোমবার উলুবেড়িয়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (২) রতন দাসের এজলাসে বছর দুয়েক আগের শ্যামপুরের ওই মামলাটির শুনানি চলছিল। তখনই ওই ঘটনা। অভিযোগকারিণী বিচারককে লিখিত ভাবে জানান, সরকারি আইনজীবী তাঁকে ঠিক ভাবে পরামর্শ দেননি। একাধিকবার তিনি হাজিরা সংক্রান্ত সমন পাননি। ফলে, আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে মামলা তাঁর বিরুদ্ধে যাচ্ছে। মহিলার আরও অভিযোগ, আসামি পক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ করে সরকারি আইনজীবী মামলার তদ্বির ঠিক ভাবে করছেন না। সরকারি আইনজীবী পরিবর্তন করার জন্যেও তিনি বিচারকের কাছে আর্জি জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, বিচারক অভিযোগকারিণীকে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। মহিলার আর্জি শোনার সঙ্গে সঙ্গে মামলার সরকারি আইনজীবী নিধুরাম নন্দী বিচারককে জানান, তিনি এই মামলা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে, এ দিন মামলাটির শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। এ দিন অভিযোগকারিণীর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। পরে নিধুরামবাবু যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, ‘‘মামলায় নিজেদেরও একটু যত্নবান হতে হয়। সরকারি আইনজীবী কি মক্কেলের সব কাজই করে দেবেন?’’ আসামি পক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, ‘‘সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এই সময়ে অভিযোগকারিণী কেন এটা করলেন বুঝতে পারছি না। এর ফলে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হতে দেরি হবে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামপুরের ওই মহিলা ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ রাজেশ শর্মা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। মহিলার অভিযোগ, রাজেশ প্রায় ন’বছর ধরে তাঁর সঙ্গে মেলামেশা করেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার সহবাসও করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজেশ অন্য একজনকে বিয়ে করেন। অভিযোগ দায়ের হওয়ার দিনই রাজেশকে গ্রেফতার করা হয়। একমাসের মধ্যে পুলিশ চার্জশিটও দেয়।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল থেকে মামলাটির শুনানি শুরু হয়। প্রথম দু’টি পর্বের শুনানিতে অভিযোগকারিণী এবং তাঁর পক্ষের সাক্ষীরা হাজির হননি। ওই মহিলার অভিযোগ, সরকারি আইনজীবী তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ফলে, তাঁরা সমন পাননি।