পুজোর মুখে ফের আরামবাগ শহর-সহ মহকুমা জুড়ে ছিনতাইবাজ এবং পকেটমারদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে। কখনও ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে বাসস্টপেজ যাওয়ার সময় মোটর সাইকেল আরোহীর কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কখনও মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি বাসের মধ্যে পকেটমারদের হাতে টাকাপয়সা খোওয়ানোর ঘটনাও বেড়েছে।
সম্প্রতি পর পর এমন ঘটনায় অতিষ্ঠ পথচারী থেকে বাসযাত্রীরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, পুজোর আগে যে ভাবে ছিনতাইকারী, কেপমাররা দাপট দেখাচ্ছে তাতে রাস্তায় বেরোনোই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহকুমার চারটি থানা এলাকার মানুষই দাবি জানিয়েছিন, “নির্বিঘ্নে পুজো উৎসব কাটাতে অবিলম্বে দাগি ছিনতাইবাজ এবং পকেটমারদের জেলবন্দি করুক পুলিশ।”
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, পুজোর মুখে সব জায়গায় পকেটমার, ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। এ সব নিয়ে পুলিশও যথেষ্ট নজরদারি শুরু করেছে। তবে অভিযোগ এলে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার আরামবাগ-বর্ধমান রোডে নৈসরাই থেকে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে বাসে ৬টি পকেটমারির ঘটনা ঘটে। কাজে যাওয়ার তাড়ায় বা পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ দায়ের হচ্ছে না। পুলিশের কাছে না যাওয়ার প্রসঙ্গে কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ, থানায় গেলে ছিনতাই বা পকেটমারির অভিযোগ নেওয়ার বদলে খোওয়া যাওয়া জিনিসের ইতিহাস জানতে জেরবার করে পুলিশ। যেমন কারও টাকা খোওয়া গেলে সেই টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিব্রত করা হয়। কাউকে ঠকানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলে শাসানো হয়। শেষমেশ চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগের বদলে হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে নিস্তার মেলে। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
আরামবাগ থেকে গোঘাট কিংবা আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর এবং বর্ধমানের বাসগুলিতে দিন দশেক ধরে পকেটমারদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ যাত্রীরা। এ ছাড়াও পুজোর বাজারে কেনাকাটার করার ফাঁকে কখনও ব্যাগ ধরে টান মেরে, কখনও ব্যাগ কেটে বা ব্যাগের চেন খুলে টাকাপয়সা, জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পুজোর আগে পকেটমারি এবং ছিনতাইয়ের এমন বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আরামবাগ, গোঘাট, পুরশুড়া ও খানাকুল থানা কর্তৃপক্ষও বিব্রত।
ওই সব থানা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু করেছে। শেখ জামির, শেখ লাল এবং শেখ ফিরোজ নাম তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের খোঁজ চলছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জনবহুল জায়গায় পকেটমার ও ছিনতাইকারীদের ছবি টাঙিয়ে মানুষকে সতর্ক করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।