অবশেষে বর্ষার মুখে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হল আরামবাগ মহকুমা এলাকায়। তাও আবার জোড়াতালি দিয়ে। স্বাভাবিক ভাবে এই তাপ্তি কতদিন থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
পূর্ত দফতরের অধীনে প্রায় ২৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা আছে। তার মধ্যে ২২ কিলোমিটার হাইওয়ে। রাস্তাগুলির মধ্যে মায়াপুর-গড়েরঘাট, গৌরহাটি-বন্দর, কাবলে-মলয়পুর, আরামবাগ-তিরোল, পুরশুড়ার কোটালপাড়া থেকে খুশিগঞ্জ, পুরশুড়া-ডিহিভুরসুট, খানাকুলের জগৎপুর-ধরমপোতা ইত্যাদি খান তিরিশেক রাস্তাই বিক্ষিপ্তভাবে ভাঙাচোরা। কোথাও টানা দু’কিলোমিটার, কোথাওবা ৪ কিলোমিটার পিচ উধাও হয়ে গিয়েছে। মহকুমা পূর্ত দফতরের (নির্মাণ) সহকারী বাস্তুকার অচিন্ত্য দে বলেন, ‘‘আমাদের অধীনে থাকা প্রায় ৮০ কিলোমিটার রাস্তার যে সব জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেগুলি সংস্কার শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা ওইসব রাস্তার উপর আমাদেরই সেতুগুলিকে নিয়ে। জরাজীর্ণ সেই সব সেতু অবিলম্বে মেরামত না হলে যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে সে সংক্রান্ত রিপোর্ট দিয়ে দ্রুত মেরামতের সুপারিশ করা হয়েছে।’’
পূর্ত দফতরেরর অন্য দু’টি বিভাগে ‘সড়ক’ ও ‘সাধারণ’-এর অধীনে সড়কগুলিরও প্রায় একই অবস্থা। পূর্ত দফতর (সড়ক)-র অধীনে প্রায় ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে আরামবাগ-গৌরহাটি ও গোঘাটের খাঁদিঘি থেকে জিতারপুর রাস্তা দু’টির মোট ৪ কিলোমিটার অংশ আমূল সংস্কারের প্রয়োজন। পূর্ত পূর্ত দফতরের (সড়ক) সহকারী বাস্তুকার জ্যোতিপ্রকাশ ধর বলেন, ‘‘আরামবাগ গৌরহাটির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। খাঁদিঘি-জিতারপুর রাস্তা সংস্কারের কাজটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া ছোট-খাট কাজ চলছে।’’ এই দফতরের অধীনে সেতু বলতে একটাই মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর নব নির্মিত দিগরুইঘাট সেতু। সেটি ঠিকই আছে।
সড়ক সংস্কারের চেয়েও সেতু মেরামত নিয়ে মাথাব্যথা বেশি পূর্ত দফতর ‘সাধারণ’ বিভাগের। এর অধীন ৬৪ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে ১০-১২ কিলোমিটার সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। সেগুলির অধিকাংশই প্রায় কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট বিভাগের।
কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলি জেলার সঙ্গে কলকাতা বা তারকেশ্বর যোগাযোগের মূল তিনটি সেতু যথাক্রমে আরামবাগের পল্লিশ্রীতে দ্বারকেশ্বর নদের উপর রামকৃষ্ণ সেতু, হরিণখোলার মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর রামমোহন সেতু এবং পুরশুড়া ও চাঁপাডাঙার সংযোগে দামোদরের উপর বিদ্যাসাগর সেতু অবিলম্বে সংস্কার করার প্রয়োজন আছে। আপাতত পল্লিশ্রীতে রামকৃষ্ণ সেতুর কাজ চলছে। যদিও পূর্ত দফতর (সাধারণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় দাবি করেন, ‘‘সেতুগুলির বহন ক্ষমতা নিয়ে এখনই কোনও আশঙ্কা না থাকলেও অধিকাংশই সংস্কার প্রয়োজন।’’