সুচেতা আত্মঘাতী, বলেছিলেন সমরেশ

ওই বছরের ২৪ অগস্ট সমরেশ তাঁকে বলেন, এক মহিলা তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছেন। এই নিয়ে তিনি বিব্রত। ওই যুবতীর দাবি, তিনি সমরেশকে বিষয়টি পুলিশ বা সহকর্মীদের জানাতে বলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৭:৫০
Share:

ফাইল চিত্র।

দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুচেতা চক্রবর্তী এবং তাঁর মেয়েকে খুনের মামলায় মঙ্গলবার শ্রীরামপুর আদালতে সাক্ষ্য দিলেন অভিযুক্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (এখন সাসপেন্ডেড) সমরেশ সরকারের পরিচিত এক যুবতী।

Advertisement

আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক কল্লোল চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই যুবতী জানান, তাঁরা আদতে কলকাতার ভবানীপুরের বাসিন্দা। তাঁর বাবার মৃত্যুর পরে কলকাতায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কার্যালয়ে সমরেশের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ক্রমে ঘনিষ্ঠতা হয়। সমরেশ তাঁদের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। তিনি এবং তাঁর মা সমরেশকে বিশ্বাস করতেন। এমনকী ওই পরিবারের যে কোনও ব্যাপারে সিদ্ধান্তও নিতেন সমরেশ।

ইতিমধ্যে সমরেশ দুর্গাপুরে বদলি হন। তখন সমরেশের কথামতো তাঁরা বাড়ি বিক্রি করে দুর্গাপুরে বাড়ি ভাড়া নেন। সমরেশ তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের প্রথম থেকে ওই মহিলা সমরেশের আচরণে অসঙ্গতি পান। সমরেশ তাঁকে এড়িয়ে যেতে থাকেন। ওই বছরেই দু’দফায় সমরেশ তাঁর অ্যাকাউন্টে কয়েক লক্ষ টাকা জমা দিয়ে তা তুলিয়েও নেন বলে অভিযোগ তরুণীর।

Advertisement

ওই বছরের ২৪ অগস্ট সমরেশ তাঁকে বলেন, এক মহিলা তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছেন। এই নিয়ে তিনি বিব্রত। ওই যুবতীর দাবি, তিনি সমরেশকে বিষয়টি পুলিশ বা সহকর্মীদের জানাতে বলেন। কিন্তু সমরেশ শোনেননি। ওই বছরেরই ২৮ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তাঁদের বাড়িতে এসে সমরেশ স্কুটার রেখে যান। তাঁকে বাইরে ডেকে বলেন, যে মহিলা বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। পরক্ষণেই আবার বলেন, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় তিনি মহিলাটিকে চড় মারেন। তাতেই দেওয়ালে ধাক্কা লেগে মহিলা মারা গিয়েছেন। যুবতী জানান, তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু সমরেশ রাজি হননি। এর পরে সমরেশ বাড়ি থেকে চলে যান। ওই রাতে এবং পরের দিন সকালে সমরেশ ফোন ধরেননি।

এর পরেই দুপুরে টিভিতে সমরেশের গ্রেফতার হওয়ার খবর দেখতে পান। বুঝতে পারেন, সমরেশ তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তাঁকে মিথ্যা বলেছেন। পুলিশ তাঁদের বাড়ি থেকে সমরেশের স্কুটারটি বাজেয়াপ্ত করে। শ্রীরামপুর আদালতে গোপন জবানবন্দিও দেন ওই যুবতী। এ দি‌ন আদালতে দাঁড়িয়ে সমরেশকে সনাক্ত করেন তিনি।

সরকারি কৌঁসুলী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের জেরার পরে আসামী পক্ষের আইনজীবী ধূর্জটিনারায়ণ পাকড়াশি সাক্ষীকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। তার পরে তিনি আদালতের কাছে এ দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিতের আর্জি জানান। এরপর বিচারক এ দিনের মতো সাক্ষ্য মুলতুবি করে আগামী ৫ অগস্ট শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন