শিক্ষিকার হস্তক্ষেপে বন্ধ হল বিয়ে

স্কুলে যাওয়ার পথে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের কথা শুনে সটান তার বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন এক শিক্ষিকা। আর তাঁর তৎপরতাতেই শেষ পর্যন্ত বন্ধ হল বিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৩
Share:

স্কুলে যাওয়ার পথে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের কথা শুনে সটান তার বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন এক শিক্ষিকা। আর তাঁর তৎপরতাতেই শেষ পর্যন্ত বন্ধ হল বিয়ে।

Advertisement

শনিবার সকালে আরামবাগের গৌরহাটি দুর্গাদাস বালিকা বিদ্যালয়ের মৌমিতা চক্রবর্তী নামে ওই শিক্ষিকা যখন স্থানীয় ফতেরচক গ্রামে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাড়িতে হাজির হন, তখন বিয়ের তোড়জোড় প্রায় সারা। সোমবার ছাত্রীটির বিয়ে ঠিক হয়েছিল আরামবাগের তালপুকুরের এক যুবকের সঙ্গে। কিন্তু ছাত্রীটি মৌমিতাদেবীকে জানায়, সে পড়তে চায়। সংসারে অনটনের কথা ভেবে সে বিয়েতে রাজি হয়।

ছাত্রীর মুখে ওই কথা শুনে আর দেরি করেননি মৌমিতাদেবী। স্থানীয় লোকজনের আপত্তি উপেক্ষা করে খবর দেন পুলিশ প্রশাসনকে। বিয়ের কেনাকাটার জন্য খরচ হয়ে যাওয়া টাকাও তিনি চাঁদা তুলে পরিবারটির হাতে তুলে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। বিকেলে পুলিশ নিয়ে সেখানে যান ব্লক সমাজকল্যাণ আধিকারিক রমেশ সর্দার। পাত্রপক্ষ এবং কন্যাপক্ষকে বুঝিয়ে তিনি বিয়ে বন্ধ করেন।

Advertisement

বিয়ে বন্ধ হওয়ায় খুশি ছাত্রীটি বলে, ‘‘দিদিমণি না থাকলে কী যে হতো! স্কুলের সব দিদিমণিরাই আমাকে পড়াশোনা চালানোর জন্য সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। আর চিন্তা নেই।’’ আরামবাগের শ্রীপল্লির বাসিন্দা মৌমিতাদেবী বলেন, ‘‘এত ছোট বয়সে যে বিয়ে দেওয়া অন্যায়, সেটা যে বোঝাতে পেরেছি, এটাই অনেক। এখন মেয়েটির পড়াশোনার সময়। আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে ওর জন্য সব রকম চেষ্টা করব।’’

ব্লক সমাজকল্যাণ আধিকারিক রমেশ সর্দার জানান, দু’পক্ষকেই ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। আইনগত দিকটিও বলা হয়েছে। ছাত্রীটির মা ও কাকারা এ নিয়ে মুচলেকা দিয়েছেন।

কয়েক বছর আগে ছাত্রীটির বাবা মারা যান। তারা চার বোন। তাদের মা দিনমজুরি এবং ঠাকুমা ভিক্ষে করে সংসার চালান। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রীটির বিয়ে ঠিক হয়। তার মা বলেন, ‘‘ভুল করছি জেনেও মেয়ের বিয়ে দিতে হচ্ছিল। মেয়ের ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত পাত্রপক্ষকে অপেক্ষা করতে বলেছি।’’ পাত্র জানান, আইনের কড়াকড়ির কথা তাঁর জানা ছিল না। ছাত্রীর বয়স ১৮ বছর হলে তবেই বিয়ে করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন