নয়ানজুলি থেকে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল তাঁরই বৌদি ও এক প্রতিবেশীকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অনিতা রায় ও অরূপ সরকার। সকলেই গোঘাটের বেলেপাড়ার বাসিন্দা। বুধবার রাতে স্থানীয় টাঁড়ুই মোড়ে রাস্তার ধারে নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার করা হয় রণজিৎ রায় (৩২) নামে এক যুবককে। তাঁকে কামারপুকুর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে অরূপ ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনিই এলাকার লোকজনকে ডেকে বলেছিলেন নয়ানজুলিতে কেউ একজন পড়ে গিয়েছেন। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্যও চেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রণজিতের পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় অরূপ ও অনিতাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের কথা স্বীকার করেছেন অরূপ। তবে তাঁর দাবি, খুন করতে তিনি চাননি। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অরূপ, রণজিতের বাড়ি। রণজিত একটি ওষুধের দোকানে কাজ করতেন। অরূপের কেব্লের ব্যবসা রয়েছে। বৌদি অনিতার সঙ্গে রণজিতের সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন। অনিতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অরূপেরও। তা নিয়ে দু’জনের গোলমালের কথাও জানতেন তাঁরা। তাই রণজিতের মৃত্যুর পর অরূপ ও অনিতার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ সাইকেল চালিয়ে অরূপ টাঁড়ুই মোড়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই রণজিতের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। অরূপের দাবি, তাঁর গলা টিপে ধরেছিলেন রণজিৎ। পাল্টা তিনিও রণজিতের গলা টিপে ধরেন। ধস্তাধস্তির সময়ই তাঁরা নয়ানজুলিতে পড়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি
করেছেন অরূপ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা অবশ্য জানিয়েছেন, ঘটনার সময় নয়ানজুলিতে ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়েই তাঁরা রাস্তা থেকে নেমেছিলেন। তখনই নীচে দেখা যায় দুই ব্যক্তিকে। অরূপ অবশ্য উপরে উঠে এসে জানান, ‘‘লোকটি সম্ভবত কোনও দুর্ঘটনায় নীচে পড়ে গিয়েছেন। সেটা দেখতেই গিয়েছিলাম। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাই।’’
এ দিন দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার আগেই অরূপের বাড়ি ভাঙচুর করেন বেলেপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ ওই অনিতা ও অরূপকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয় দু’জনকেই।
পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানার জন্য রণজিতের মৃতদেহ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে।