উদয়নারায়ণপুরে নেই সিপিএম-বিজেপির এজেন্ট

সূর্য ডোবার পরেও চলল ভোটগ্রহণ

হাওড়ার জেলাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার চৈতালি চক্রবর্তী জানান, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৭৮ শতাংশ। তার পরেও কিছু বুথে ভোটগ্রহণ চলে।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৭
Share:

নিয়ম-মেনে: ভোট দিতে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে মহিলারা। উলুবেড়িয়ার একটি বুথে। ছবি: সুব্রত জানা

গোলমাল দু’-এক জায়গায়। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের বহরও তেমন নেই। সোমবার মোটের উপরে শান্তিতেই মিটল উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন।

Advertisement

হাওড়ার জেলাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার চৈতালি চক্রবর্তী জানান, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৭৮ শতাংশ। তার পরেও কিছু বুথে ভোটগ্রহণ চলে। ইভিএম বিকল হয়ে যাওয়ায় এ দিন কয়েকটি বুথে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কিছুক্ষণের জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। আবার বেশ কিছু বুথে ভিভিপ্যাট যন্ত্রে ত্রুটি (এরর) দেখা দেওয়ায় তা পাল্টে দেওয়া হয়।

তবে, উদয়নারায়ণপুরের ২৬০টি বুথের অধিকাংশতেই বিজেপি এবং সিপিএমের এজেন্টের দেখা না-মেলায় চমকে গিয়েছেন অনেকেই। তবে, তৃণমূল, নির্দল এবং কংগ্রেসের এজেন্ট ছিল। কানুপাট প্রাথমিক স্কুল বা কানুপাট হাইস্কুলের বুথেও দেখা গিয়েছে একই ছবি। কানুপাট প্রাথমিক স্কুলের বুথের প্রিসাইডিং অফিসার সফিকুল হক বলেন, ‘‘সব প্রার্থীর পক্ষ থেকেই এজেন্ট রাখার ফর্ম পূরণ করা হয়েছিল। তাঁদের জন্য নিয়োগপত্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিন জন ছাড়া বাকিরা আসেননি।’’

Advertisement

কেন এজেন্ট দিতে পারল না বিজেপি এবং সিপিএম?

ওই দু’দলের অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে তাঁদের দলের এজেন্টকে অনেক বুথ থেকে বের করে দেওয়া হয়। অনেককে আবার বুথ পর্যন্ত যেতেই দেওয়া হয়নি। সিপিএম প্রার্থী সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘ওই এলাকায় কংগ্রেসেরই বরং কোনও কর্মী-সমর্থক নেই। তাদের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নির্বাচন কমিশনের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য তৃণমূলই বকলমে কংগ্রেসের হয়ে এজেন্ট বসিয়েছে।’’ একই অভিযোগ বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুরও। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।’’

অভিযোগ নস্যাৎ করেছে শাসকদল। তাদের পাল্টা প্রশ্ন, কংগ্রেসের এজেন্টরা ছিলেন কী ভাবে? উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা বললেন, ‘‘বিজেপি এবং সিপিএমের কোনও কর্মী নেই। ফলে, তারা অধিকাংশ বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। উল্টে মানুষকে ভুল বোঝানোর জন্য গুজব রটাচ্ছে।’’ কংগ্রেসও তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজশের কথা অস্বীকার করেছে। উল্টে আমতার কংগ্রেস বিধায়ক এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে ম‌ন্তব্য করেছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। বুথে ভয় দেখানো বা এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এ দিন সকালে উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন গঙ্গারামপুরে একটি বুথের সামনে বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। বিজেপির অভিযোগ, তাদের বুথক্যাম্প ভেঙে দেয় তৃণমূল। প্রতিবাদে বিজেপি সমর্থকেরা মিনিট পনেরো ওটি রোড অবরোধ করেন। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা তাদেরই এক মহিলা সমর্থককে ভোট দিয়ে ফেরার পথে মারধর করে। তৃণমূলের এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এক বিজেপি নেতাকে আটক করে। উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের জোয়ারগড়ি এবং উলুবেড়িয়া দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের জয়নগরেও বিজেপি এবং তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন