প্রত্যাবর্তন: ছেলের সঙ্গে বাড়ি ফেরা। নিজস্ব চিত্র
হাওড়া স্টেশনে ট্রেন ধরতে এসে বাবাকে হারিয়ে ফেলেছিলেন কটকের এক যুবক। বিজ্ঞাপনের সূত্রে কয়েক দিনের মধ্যেই হুগলির কোন্নগর থেকে বাবাকে খুঁজে পেলেন তিনি। বুধবার বিকেলে কোন্নগরের নবগ্রামের একটি হোম থেকে বাবা রামচন্দ্র পাধিকে নিয়ে যাওয়ার সময় খুশি ধরছিল না ছেলে বিনোদের মুখে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে এক বৃদ্ধ মানকুণ্ডুর রাস্তায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন। ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। চন্দননগরের মহকুমাশাসক সানা আখতারের নির্দেশে তাঁকে নবগ্রামের ওই হোমে রাখা হয়। হোমের সুপার উমেশচন্দ্র ঘোষাল জানান, বৃদ্ধ মানসিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন। তিনি সে ভাবে কিছুই বলতে পারছিলেন না। শুধু ‘কটক’ এবং ‘টাইপিস্ট’ এই দু’টি শব্দ বোঝা যাচ্ছিল। হোম থেকে দু’বার তিনি বেরিয়ে পড়ারও চেষ্টা করেন। কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁর কাউন্সেলিং করানো হয়।
মঙ্গলবার খবরের কাগজে নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞাপন দেখে বিনোদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন হোম কর্তৃপক্ষ। বিনোদ কটকের বাসিন্দা হলেও দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে কাজ করেন। হোয়াটসঅ্যাপ মারফত বৃদ্ধের ছবি পাঠানো হয় তাঁকে। দেখা যায়, উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধ বিনোদেরই বাবা। ওই দিনই হুগলিতে চলে আসেন বিনোদ। প্রশাসনিক কাজকর্ম মিটিয়ে বুধবার বিকেলে বাবাকে নিয়ে যান তিনি।
বিনোদ জানান, তাঁর বাবার বয়স ৬২ বছর। কটকেই থাকেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতায় আসেন একটি পরীক্ষার সূত্রে। বাবাও সঙ্গে আসেন। হাওড়া স্টেশনে ফেরার ট্রেন ধরার সময়ে হঠাৎ রামচন্দ্রবাবু হারিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি, স্টেশনে সিসিটিভির ফুটেজ দেখেও তাঁর হদিস মেলেনি। উপায় না-দেখে শেষ পর্যন্ত পরিবারের তরফে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তাতেই কাজ হয়।
হুগলির প্রশাসনিক উদ্যোগ এবং হোমের ব্যবস্থাপনায় বিনোদ খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। এখানে এসে দেখলাম, বাবা হোমে যত্নেই ছিলেন।’’