লক্ষ্য ছিল নাকি সোনার দোকান! কিন্তু দেওয়াল কেটে চুরি হল লাগোয়া চশমার দোকানে।
ব্যান্ডেল স্টেশন রোডে রবিবার রাতে ওই চুরির কথা জানাজানি হওয়ার পরে পুলিশ মনে করছে, চোরেরা দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়েছে। ব্যবসায়ীরাও মনে করছেন, চোরেরা ‘মিস ফায়ার’ করেছে। লক্ষ লক্ষ টাকার সোনার গয়না হাতাতে এসে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে কিছু চশমা আর নগদ কয়েক হাজার টাকায়।
কেন এমন মনে হওয়া?
ব্যান্ডেল স্টেশন রোডের একটি দোতলা বাড়ির নীচে পর পর রয়েছে চশমার দোকান, সোনার দোকান, ক্রীড়া সরঞ্জামের দোকান-সহ পাঁচ-ছ’টি দোকান। চশমার দোকানটি একেবারে ডান দিকে। পাশ দিয়ে রয়েছে সিঁড়ি। চোরেরা সিঁড়ি লাগোয়া পাঁচ ইঞ্চির দেওয়ালটি প্রায় দেড় ফুট লম্বালম্বি কেটে ফেলে। কিন্তু তাতে তারা সোনার দোকান পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। দেওয়ালের যে অংশটি কেটে তারা ঢোকে, সেটি চশমার দোকানের ডাক্তারের ‘চেম্বার’। পুলিশ বলছে, আন্দাজে ভুল।
কিন্তু চোরেরা ভুল সংশোধন করল না কেন? তদন্তকারীদের ধারণা, চোরেরা ততটা পটু নয়। তা ছাড়া, হয়তো ভোরের দিকে চুরি করতে ঢুকে আর সময় পায়নি।
চোরেদের ‘ভুল’কে হাল্কা ভাবে নিতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। তাঁরা আতঙ্কিত। কিছুদিন আগেই দাবিমতো তোলা না-দেওয়ায় কাছেই ব্যান্ডেল মোড়ের একটি বন্ধ জামাকাপড়ের দোকানে বোমাবাজি করে, শূন্যে গুলি চালিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তার পরে ফের দুষ্কৃতীদের উপদ্রবে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
চুরির ঘটনাটি সোমবার সকালে জানাজানি হতেই এলাকায় ভিড় হয়। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘চশমার দোকানের সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হচ্ছে। তাদের ধরতে তল্লাশি চালানো হবে।’’
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চশমার দোকানের ভিতরে ইটের টুকরো পড়ে রয়েছে। জিনিসপত্র লন্ডভন্ড। দোকান-মালিক সুজিত পাল বলেন, ‘‘সিসিটিভি-র ফুটেজে দেখা যাচ্ছে চার জন রয়েছে। সকলের মুখ ঢাকা। নিরাপত্তা বলে আর কিছুই রইল না। ওরা এ বার দোকানের দেওয়াল কাটল। কোনও দিন বাড়ির দেওয়ালও কেটে ফেলতে পারে।’’
ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সৈকত গোস্বামীর ক্ষোভ, ‘‘এখানে দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত রুখতে অবিলম্বে পুলিশের কড়া পদক্ষেপ করা উচিত। আমরা খুব আতঙ্কে রয়েছি। এ ভাবে কি ব্যবসা চালানো যায়?’’