গেট: নালিকুলের সেই ১৪ নম্বর রেল গেট। ছবি: দীপঙ্কর দে
কামারকুণ্ডুর পরে এ বার হুগলির নালিকুলে ১৪ নম্বর রেলগেটে উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব অনুমোদন করল পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। রেল এবং রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে ওই প্রকল্পের প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে অন্তত ১৬ কোটি টাকা।
পূর্ব রেলের মুখপাত্র রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘হাওড়া-তারকেশ্বর শাখার নালিকুল স্টেশনের কাছে ওই উড়ালপুলের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। স্থানীয় মানুষজনের চাহিদাকে সম্মান জানাতেই ওই প্রকল্প।’’
দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকার বাসিন্দা রেলগেটে উড়ালপুলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। শ্রাবণী মেলায় ওই পথ ধরে হাজার হাজার পুণ্যার্থী তারকেশ্বর মন্দিরে যান। বৈদ্যবাটি থেকে তারকেশ্বর রোড হয়ে টানা ৩৮ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয় তাঁদের। অনেক সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। আবার নালিকুলের রেলেগেটে উড়ালপুল না-থাকায় ট্রেন আসার সময়ে বহু মানুষ রাস্তায় আটকে যান। তীব্র যানজট হয়। কয়েক বছর আগে শ্রাবণী মেলায় তারকেশ্বরে জল ঢালতে গিয়ে কামারকুণ্ডু রেলগেটে পদপিষ্ট হয়ে ভিন্ রাজ্যের এক মহিলা মারা যান। আহত হন বেশ কয়েকজন পুণ্যার্থী।
এরপর একই সঙ্গে কামারকুণ্ডু এবং নালিকুল ১৪ নম্বর রেলগেটে উড়ালপুলের দাবি ওঠে। মাস কয়েক আগে কামারকুণ্ডু রেলগেটে উড়ালপুলের কাজ শুরু হলেও নালিকুলের অনুমোদন ঝুলেই ছিল। এ বার রেল তা অনুমোদন করল। উড়ালপুল তৈরিতে ইতিমধ্যেই মাটি পরীক্ষার (সয়েল টেস্ট) কাজ হয়ে গিয়েছে। রেল সূত্রের খবর, আপাতত মোট ১৫ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামী দু’বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার কথা।
কৃষিপ্রধান ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি হিমঘরও রয়েছে। আলুর মরসুমে আলু বোঝাই ট্রাক ওই হিমঘরগুলিতে ঢোকে। তা ছাড়াও ওই পথেই আলুর ট্রাক দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও বর্ধমানে যায়। ফলে, রাস্তায় তীব্র যানজট হয়। পথে বের হয়ে নাকাল হন সাধারণ মানুষজন। এই সব সমস্যা এড়াতেই রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে ওই উড়ালপুলটি অনুমোদন করল রেল।
হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরই ২০১১ সালে ওই সেতুর জন্য রেলের কাছে আবেদন করেছিলাম। প্রাথমিক ভাবে সেই আবেদনে রেল সাড়া দেয়নি। এরপর মোট তিন বার আমরা আবেদন করি। আমরা খুশি যে ওই সেতু হতে যাচ্ছে।’’
খুশি সাধারণ মানুষও। পশ্চিম নালিকুল পঞ্চায়েতের বাগানবাটির বাসিন্দা প্রসেনজিৎ কোলে বলেন, ‘‘শুনলাম উড়ালপুলের সঙ্গেই রাস্তা চওড়ার কাজও শুরু হবে। তা হলে এখানে যানজট কমবে। অনেক আগেই এটা হওয়া জরুরি ছিল।’’