চুরির সময় ভোররাত। দরজার তালা ভাঙতে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার। মূল বিগ্রহ অক্ষত থাকলেও সোনা-রুপোর অলঙ্কার লোপাট। সম্প্রতি ডোমজুড়ের কয়েকটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় এমনই মিল খুঁজে পেয়ে পুলিশের অনুমান চুরির পিছনে রয়েছে একটি নির্দিষ্ট চক্র।
ডোমজুড় থানার কয়েকটি গ্রামে গত কয়েক মাসে পর পর মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ এপ্রিলের শেষে মাকড়দহ গ্রামের তারা মা মন্দিরে চুরি। এর আগে চুরির অভিযোগ ওঠে উত্তর ঝাঁপড়দহ মহাকালতলা (মাকালতলা) মন্দির, চামুন্ডামাতা মন্দির, শ্মশানকালী মন্দির ও জাপানিগেটের একটি মন্দিরে। সব জায়গা থেকেই মূলত অলঙ্কার সামগ্রীই চুরি গিয়েছে। এখনও অবধি একটি চুরিরও কিনারা না হওয়ায় এবং চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, মাকড়দহ ও জাপানিগেটের মন্দিরে চুরি ছাড়া বাকিগুলির ক্ষেত্রে থানায় নির্দিষ্ট অভিযোগ হয়নি। যে দু’টি ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে সেগুলির তদন্ত চলছে।
ডোমজুড় থানার এক পুলিশ কর্তার দাবি, ‘‘২৫-২৮ বছর বয়সী দুষ্কৃতীদের একটি দলই সব কটি চুরির সঙ্গে যুক্ত। তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তবে এই ঘটনার পিছনে আরও মাথা যুক্ত রয়েছে বলেই আমাদের অনুমান। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই আমরা সব কটি চুরির কিনারা করতে পারব।’’ তদন্তে নেমে জাপানিগেটের মন্দিরের সামনে লাগানো সিসিটিভির যে ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, রাত তিনটের পর একটি মোটরবাইকে করে তিনজন যুবক মন্দিরের সামনে এসে দাঁড়ায়। তারপর মোটরবাইক থেকে নেমে একজন মুখে রুমাল বেঁধে মন্দিরের দরজার সামনে চলে যায়। একজন মন্দিরের দেওয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়ে। আরেক জন মোটরবাইকটি বন্ধ করে সেটিকে নিয়ে মন্দিরের সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটাতে শুরু করে। কিছু দূর গিয়ে আবার পিছনে ফিরে মন্দিরের সামনে চলে দেখলে আসে। যেন তেল শেষ হয়ে যাওয়ার জন্য সে মোটরবাইক হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মন্দিরের দরজা প্রথমে ভাঙা যায়নি। দেওয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকের থেকে একটি যন্ত্র নিয়ে তালা ভাঙা হয়। তারপর ভিতরে ঢুকে অলঙ্কার নিয়ে বেরিয়ে এসে মোটরবাইকে উঠে চম্পট দেয় তারা। মাকড়দহে তারা মা মন্দিরে চুরির কয়েক ঘণ্টা আগে ওই মন্দিরের আশপাশে এমন দু’জনকে গাঁজা খেতে দেখা গিয়েছিল যাদের সাধারণত ওই এলাকায় দেখা যায় না। এছাড়াও গ্রামের পঞ্চায়েত নিযুক্ত চৌকিদার ওই রাতেই ছিলেন না। তাই স্থানীয় যোগ উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না বলেই পুলিশ জানিয়েছে। অন্য মন্দিরগুলিতে চুরির ঘটনা থানায় না জানানোর বিষয়ে স্থানীয় মানুষের যুক্তি, পুলিশি হয়রানির ভয়েই থানায় জানানো হয়নি। তাঁদের ক্ষোভ, মন্দিরে তদন্তে এসে স্থানীয় লোকজনকেই হেনস্থা করে পুলিশ। কিন্তু চুরির কিনারা হয় না।
এই অবস্থায় অভিযোগ হওয়া দু’টি চুরির কিনারা করে স্থানীয় মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন চ্যালেঞ্জ পুলিশের কাছে।
ধুলাগোড়ির বোমাবাজিতে ধৃত ২। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বোমাবাজির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সবুর আলি শেখ ও রহমান শেখ। মঙ্গলবার সকাল থেকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় ধুলাগোড়ির মোল্লাপাড়া ও উত্তরপাড়া এলাকায়। ঘটনাস্থল থেকে ওই দিনই ধৃতদের আটক করে পুলিশ। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতেরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত বলে পুলিশ জানিয়েছে।