ছবি: মোহন দাস।
সহায়ক মূল্যে আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সেই ঘোষণামতো আজ, মঙ্গলবার থেকে হুগলিতে আলু কেনা শুরু হবে জানাল জেলা প্রশাসন।
সোমবারই জেলার ১৮টি ব্লকের আধিকারিক এবং প্রশাসনিক কর্তারা এ নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক করেন। রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো জেলার সমস্ত স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির মিড-ডে মিল প্রকল্পের জন্য ওই আলু কেনা হবে। জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “মঙ্গলবার থেকেই সব ব্লকে আলু কেনা শুরু হবে। আপাতত উপভোক্তাপিছু সপ্তাহে এক কেজি করে আলু পর পর চার সপ্তাহ চাষিদের কাছ থেকে কেনা হবে। ব্লক প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিগুলি তা কিনে সরবরাহ করবে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ মার্চ জেলাশাসকের দফতরে আলু কেনাকে কেন্দ্র করে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনার পূর্ণাাঙ্গ রূপরেখাও তৈরি হয়ে যায়। মিড-ডে মিল চলছে, জেলায় এমন স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মোট সংখ্যা ৪২৫৪। কেন্দ্রগুলির ছাত্রছাত্রী-সহ মোট উপভোক্তা ৬ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩৬১ জন। কেনা আলু তাদের কাছে পৌঁছে দেবে জেলার ৪১৩টি কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি।
১৩ মার্চের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, উপভোক্তাপিছু সপ্তাহে এক কেজি করে আলু পরপর চার সপ্তাহ কেনা হবে। চার সপ্তাহে আলু কেনার পরিমাণ হবে মোট ২৫৫৭.৪৪ টন। সরকারি ভাবে আলু কেনার সহায়ক মূল্য সাড়ে পাঁচ টাকা কেজি হিসাবে যার দাম হবে ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৪২ টাকা। আলুর গুণগত মান নিশ্চিত করবেন জেলা কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর। সংশ্লিষ্ট ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকরা নির্দিষ্ট করে দেবেন এলাকার কোন কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি কোন স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য আলু কিনবেন। পুরসভা এলাকার ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনই কাছাকাছি কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিকে দায়িত্ব দেবেন। ব্লক স্তরে সমস্ত প্রক্রিয়া তদারক করবেন সংশ্লিষ্ট বিডিওরা। কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি পরিবহণ খরচ বাবদ পাবে টনপিছু ৫০০ টাকা। চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কিংবা কিসান ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে।
অবশেষে, সরকারি ভাবে আলু কেনা শুরু হওয়ার কথা ঘোষণা হওয়ায় জেলার চাষিরা উত্সাহ দেখালেও কিছুটা সংশয়ও তাঁদের রয়েছে। কেননা, তাঁরা জানেন না, তাঁদের মোট ফলনের কত শতাংশ সরকার কিনবে? সকলে সহায়ক মূল্যে আলু বিক্রির সুযোগ পাবেন কিনা! এ সব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি।
এ দিন আরামবাগের রায়পুর গ্রামের আত্মঘাতী আলুচাষি তপন জানার বাড়িতে যান আরামবাগের সিপিএম নেতারা। দলে ছিলেন আরামবাগের প্রাক্তন বিধায়ক বিনয় দত্ত, মোজাম্মেল হোসেন এবং আরামবাগ জোনাল কমিটির সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা তপনবাবুর স্ত্রী পূর্ণিমাদেবীকে দলের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দেন।