পাশে স্কুল, অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ মেঘা

কিন্তু বললেই তো সমাধান মেলে না। মেঘার নিম্নবিত্ত পরিবারে এমন সমস্যা চিন্তার মেঘ ডেকে আনে। কিন্তু হাল ছাড়েননি পঞ্চাননবাবু। তিনিই  চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান মেঘাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডানকুনি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:০০
Share:

সুস্থ: বাড়িতে মেঘা। নিজস্ব চিত্র

এক রত্তি মেয়ে। আর পাঁচটা মেয়ের সঙ্গে ছুটে বেরানোর কথা তার। অথচ বছর নয়েকের মেঘা একটু হাঁটলেই হাঁফিয়ে পড়ে। সঙ্গে শ্বাস নিতে কষ্ট।

Advertisement

চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা ডানকুনি শ্রীরামকৃষ্ণ শিশুতীর্থ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন শিশুদের পরীক্ষা করতে। তাঁরাই প্রথম এমন সমস্যার কথা জানান প্রধান শিক্ষক পঞ্চানন সরকারকে। চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালের পাশাপাশি মেঘাকে জেলা সদর চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। পঞ্চাননবাবু বিষয়টা মেঘার বাড়ির লোকজনকে বলেন।

কিন্তু বললেই তো সমাধান মেলে না। মেঘার নিম্নবিত্ত পরিবারে এমন সমস্যা চিন্তার মেঘ ডেকে আনে। কিন্তু হাল ছাড়েননি পঞ্চাননবাবু। তিনিই চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান মেঘাকে।

Advertisement

চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, তার হার্টে ফুটো রয়েছে। সেই চিকিৎসায় বিস্তর খরচ। আর সরকারি হাসপাতালে তা হবে না।

কিন্তু এমন চিকিৎসা তো মেঘার পরিবারের পক্ষে করা সম্ভব নয়। মা গৃহবধূ আর বাবা হোটেলে রাঁধুনির কাজ করেন। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে চিকিৎসাই যেন তাদের বিলাসিতা। হাল ছাড়েননি স্কুলের শিক্ষকরাও।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক পঞ্চাননবাবু নিজে উদ্যোগী হয়ে মেঘার চিকিৎসার ভার নেন। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা চিকিৎসার বিষয়ে বৈঠক করেন। স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওঠে বেশ কিছুটা টাকাও। সেপ্টেম্বর মাসে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেঘার অস্ত্রোপচার হয়। আপাতত সে সুস্থ।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘যে ভাবে শিক্ষিকারা এবং আমাদের পরিচিতরা সাহায্য করেছেন তার তুলনা হয় না। মোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পরিস্থিতিতে সবাই মিলে এগিয়ে না এলে আমরা সাহস পেতাম না।’’

মেঘার মা রেখা সাউ বলেন, ‘‘চণ্ডীতলা হাসপাতালের চিকিৎসকরাই প্রথম আমার মেয়ের অসুখটা ধরেন। আমাদের সত্যি কিছু করার ছিল না। স্কুলের শিক্ষকরা পাশে না দাঁড়ালে মেয়েটাকে আর ফিরে পেতাম না। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন