প্রতিশ্রুতির ৬ মাস পার, ভোগান্তি অব্যাহত প্রসূতিদের

শিবির খুলবে কবে, প্রশ্ন ভাটোরায়

হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শরৎ সদনের সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরে পরিকল্পনা তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

নুরুল আবসার

জয়পুর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত মে মাসে হাওড়া জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জয়পুরের ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েত এলাকার প্রসূতিদের জন্য অস্থায়ী স্বাস্থ্যশিবির করা হবে। খুশি হয়েছিলেন হাওড়ার ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত ওই দুই পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। কিন্তু তার পর ছয় মাস কেটে গিয়েছে। প্রসূতিদের জন্য কোনও স্বাস্থ্যশিবির হয়নি। শুধু তাই নয়, ওই এলাকার দক্ষিণ ভাটোরায় যে ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য শিবিরটি চলছিল সেটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শরৎ সদনের সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরে পরিকল্পনা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। জয়পুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসূতিদের জন্য আলাদা ব্লক তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয়, প্রসবের নির্ধারিত সময়ের কয়েকদিন আগে থেকেই প্রসূতিরা সেখানে থাকতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে কোনও কাজ হয়নি। সমস্যার কথা জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোনও মহল থেকেই আশ্বাস আসেনি।

রূপনারায়ণ নদ এবং মুণ্ডেশ্বরী নদী দিয়ে ঘেরা ওই দুই পঞ্চায়েত এলাকায় কেউ অসুস্থ হলে ভরসা ভাটোরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেখানে নিয়মিত পরিষেবা পাওয়া যায় না। এখন সেখানে সপ্তাহে তিনদিন চিকিৎসক আসেন। বাকি দিনগুলিতে ওষুধ দেন ফার্মাসিস্ট। একসময়ে সেখানে অন্তর্বিভাগ খোলার সিদ্ধান্ত হলেও সেটি কার্যকর হয়নি। কারণ হিসাবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, রাস্তা দুর্গম হওয়ায় চিকিৎসক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে রাজি হননি।

Advertisement

পরিস্থিতি সামলাতে জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে দক্ষিণ ভাটোরা গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় এক বছর ধরে ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য শিবির চালানো হচ্ছিল। রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ওই পরিষেবা দিচ্ছিল। শিবিরে বিনামূল্য রক্ত পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ওষুধ দেওয়ার কাজ হচ্ছিল। কিন্তু গত ১ অক্টোবর থেকে টাকার অভাবে সেটিও বন্ধ।

বেশি সমস্যায় পড়েছেন প্রসূতিরা। প্রসবের জন্য তাঁদের অমরাগড়ি বিবি ধর গ্রামীণ হাসপাতাল বা জয়পুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হয়। পেরোতে হয় মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁশের সাঁকো। সেই ধকল নিতে না পেরে অনেকের রাস্তাতেও প্রসব হয়ে যায়।

হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘জয়পুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসূতিদের জন্য আলাদা ব্লকটি টাকার অভাবে চালু করা যাচ্ছে না। আশা করছি শীঘ্রই টাকা এসে যাবে।’’ অস্থায়ী স্বাস্থ্যশিবিরটি ফের চালুর জন্য স্বাস্থ্যভবনে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন