রাস্তার উপরেই রাখা ইট। আরামবাগ লিঙ্ক রোডে।—মোহন দাস।
রোগটা পুরনো। কিন্তু উপশম নেই!
দুর্ঘটনার আশঙ্কা সত্ত্বেও রাস্তার ধারে ইট-বালি-পাথর রাখায় বিরাম নেই। হুগলির বিভিন্ন পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত, সর্বত্রই এক ছবি এবং প্রতি ক্ষেত্রেই সমস্যা নিয়ে প্রশাসন নির্বিকার। অথচ এক সময় দুর্ঘটনা রুখতে রাস্তার ধারে নির্মাণ জিনিসপত্র ফেলে রাখা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু সেই বার্তায় ফল হয়নি। তাই এড়ানো যাচ্ছে না পথ দুর্ঘটনা।
এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনের অভিযোগ, নির্দেশ থাকে ঠিকই তবে তা মানার দায় থাকে না। কারণ, কি বাম, কি বর্তমান শাসক দল সব ক্ষেত্রেই রাজনীতি শেষ কথা। যারা নির্মাণ কাজে যুক্ত, দেখা গিয়েছে তারা কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য। ফলে পুলিশও নিরুপায়।
মাস কয়েক আগে শ্রীরামপুরে জিটি রোডের ধারে ফেলে রাখা বালির কারণে এক পথচারী জখম হন। তখন এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর পরে দু’-একটি জায়গায় ইমারতি দ্রব্য ফেলা আটকাতে পুরসভা উদ্যোগী হয়। শহরের চাতরা এলাকায় দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে চিহ্নিত একটি রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য না ফেলার নির্দেশ দিয়ে বোর্ড ঝুলিয়ে দেয় পুরসভা। বাসিন্দাদের বক্তব্য, যেখানে বোর্ড ঝোলানো থাকে, সেখানে ইমারতি দ্রব্য ফেলা কমেছে বটে। তবে সর্বত্র তা হয়নি। কিছু দিন আগে বাঁশবেড়িয়ার ঝুলনিয়া মোড়ে রাস্তায় পড়ে থাকা বালির জন্য দু’টি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অভি়যোগ, ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ীদেরই অনেকেই রাস্তার উপরেই ব্যবসা করেন। মশাট, চণ্ডীতলা, সিঙ্গুর, খন্যান, বৈদ্যবাটি, কানাইপুর, মগরা সব জায়গাতেই এক সমস্যা। বিশেষত উত্তরপাড়া, চন্দননগর, চুঁচুড়ার মতো শহরে প্রোমোটারি রাজ বেশি। ফলে রাস্তার উপর ইট-বালি-পাথরকুচি পড়ে থাকার ঘটনা ও তার জেরে দুর্ঘটনাও বেশি। সাধারণ মানুষজন এ সব প্রতিবাদ করতে গেলে সইতে হয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের চোটপাট।
যদিও এর সঙ্গে রাজনীতির সংশ্রব মানতে চাননি উত্তরপাড়া পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, পুর এলাকায় রাস্তার উপর ইমারতি দ্রব্য রাখা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট কড়া। রাস্তায় মালপত্র রাখা হলে তা বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমি চাই এলাকার রাস্তাঘাট যেন পুরবাসীরা স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য নানা পদক্ষেপও বিভিন্ন সময়ে করা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকাবাসীর সচেতনতাও জরুরি।’’
যদিও পুর এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘উনি এমন দাবি করবেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলে।’’