প্রাক্তন শিক্ষক প্রণব ভারতরত্ন, স্কুলে উৎসব

স্কুলের মাঠে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর হাতে ধরা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দু’টি ছবি। বেজে উঠল ব্যান্ড। কিছু পড়ুয়া নাচতে থাকল। প্যারেড হল, গান হল। সবশেষে মিষ্টি বিলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৫
Share:

পালন: প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নানা মুহূর্তের ছবির কোলাজ হাতে নিয়ে ছাত্ররা। স্কুল চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের মাঠে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর হাতে ধরা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দু’টি ছবি। বেজে উঠল ব্যান্ড। কিছু পড়ুয়া নাচতে থাকল। প্যারেড হল, গান হল। সবশেষে মিষ্টি বিলি।

Advertisement

শনিবার, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানটি কিছুটা অন্য রকম হল আমতার তাজপুর এম এন রায় ইনস্টিটিউশনে। কারণ, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণববাবু এ বার ‘ভারতরত্ন’ এবং তিনি ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষকও। তাই তাঁকে সম্মান জানাতে ওই অনুষ্ঠান। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আনন্দে সামিল হলেন গ্রামবাসী, প্রাক্তন ছাত্র এবং শিক্ষকেরাও।

স্কুলটি ১২৫ বছরে পড়েছে। সেই উপলক্ষে ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর পালিত হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। তার আগে ১৯৯৫ সালে ১০০ বছরের পূর্তি উৎসব হয়। দু’টি অনুষ্ঠানেই প্রণববাবু যোগ দিয়েছিলেন‌। ১০০ বছরের অনুষ্ঠানে যখন এসেছিলেন, তখন তিনি ছিলেন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং দেশের বিদেশমন্ত্রী। ২০১৭ সালে যখন আসেন, তখন তিনি সদ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। দু’টি অনুষ্ঠানেই প্রণববাবুর যোগ দেওয়ার ছবি স্কুলে যত্নের সঙ্গে রাখা আছে।

Advertisement

শুক্রবার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির ‘ভারতরত্ন’ খেতাব পাওয়ার কথা ঘোষণার পরেই ওই স্কুলে তাঁর সম্মানে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শনিবার প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের পরেই প্রণববাবুর ছবি নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে ছাত্রছাত্রীরা। তাদের মধ্যে একাদশ শ্রেণির অর্ক রায় বলে, ‘‘এতদিন ভারতরত্নের কথা খবরের কাগজে পড়েছি। গর্ব হচ্ছে আমাদের স্কুলেরই প্রাক্তন শিক্ষক তা পেলেন।’’ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবলু ভৌমিক বলেন, ‘‘আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি দেব। এটার আমাদের কাছে গর্বের ব্যাপার।’’

এই স্কুলে প্রণববাবু যোগ দেন ১৯৫৭ সালে। তবে বেশিদিন শিক্ষকতা করেননি। সাকুল্যে মাসছয়েক স্কুলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু স্বল্প সময়ের শিক্ষকতার দিনগুলি তিনি যে ভোলেননি, তার প্রমাণ মিলেছিল ১২৫ বছরের অনুষ্ঠানে দেওয়া তাঁর ভাষণে। প্রথম কর্মজীবনের দিনগুলির তিনি বিবরণ দিয়েছিলেন নিখুঁত ভাবে, যা স্থানীয় মানুষজনকে অবাক করেছিল। শুধু তাই নয়, একাধিক গ্রামবাসী এবং তাঁর আমলের কয়েকজন ছাত্রের নামও সে বার উল্লেখ করেছিলেন প্রণববাবু। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘অসাধ্য কিছুই নেই। চেষ্টা করলে অনেক উঁচুতে ওঠা যায়।’’ একইসঙ্গে তাঁর পরামর্শ ছিল, ‘‘যত উঁচুতেই ওঠো, পা যেন মাটিতে থাকে।’’

স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র তথা বর্তমান স্কুল সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘স্যারের ওই পরামর্শ যে নিছক কথার কথা ছিল না তা বোঝা গিয়েছে তাঁর নিজের আচরণে। স্কুলের অনুষ্ঠানে যখন আসেন তখন তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু যখন ভাষণ যখন দিচ্ছিলেন, তখন যেন একজন শিক্ষক!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement