ছাত্রকে লাথি, শিক্ষক ধৃত

হরিপালের জামাইবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকের নাম কাশীনাথ পাত্র। শুক্রবারের ঘটনা। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বছর খানেক আগেও ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২২
Share:

পড়া না-পারায় ক্লাসের মধ্যেই ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে মেঝেতে ফেলে বুট দিয়ে লাথি মারার অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। হরিপালের জামাইবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকের নাম কাশীনাথ পাত্র। শুক্রবারের ঘটনা। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বছর খানেক আগেও ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

স্কুল সূত্রের খবর, শুক্রবারের ঘটনায় আক্রান্ত আকাশ পুল নামে ওই ছাত্রের বাড়ি জামাইবাটি গ্রামেই। কাশীনাথবাবুও ওই গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার তৃতীয় পিরিয়ডে কাশীনাথবাবু তাদের বাংলা ক্লাস নিচ্ছিলেন। আকাশকে তিনি লিখতে দিয়েছিলেন। ছেলেটি ভুল করে। অভিযোগ, ছেলেটির খাতা দেখামাত্র রাগে কাশীনাথবাবু প্রথমে বুকে ঘুষি মেরে ছেলেটির মেঝেতে ফেলে দেন। তার পরে লাথি মারেন। ছাত্রের জামায় শিক্ষকের বুটের দাগ বসে যায়।

মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে আকাশ। সে বমি করতে থাকে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আকাশ জানায়, কাশীনাথবাবু বুট দিয়ে তার পিঠে গোটা চারেক লাথি মারেন। এসডিপিও (চন্দননগর) রানা মুখোপাধ্যায় জানান, ওই শিক্ষককে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে মনে হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

ছেলেটির মা নমিতা পুল হরিপাল থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। নমিতাদেবী বলেন, ‘‘যে ভাবে স্যার ওকে মেরেছেন, যদি ভালমন্দ কিছু একটা হয়ে যেত! শাসনের নামে মাটিতে ফেলে বুট দিয়ে পিটতে হবে? ছেলে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, কাশীনাথবাবু মাঝেমধ্যেই পথেঘাটে তাঁকে কটূক্তি করেন। অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য ওই শিক্ষকের পরিবারের তরফে চাপ দেওয়া হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রায়ই পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের নালিশ শুনতে হয়। কিন্তু কিছু বলতে গেলে উনি শোনেন না। উল্টে আমাকেই কটূ কথা বলেন।’’

আকাশ মার খাওযার কথা অন্য শিক্ষকদের জানায়। প্রধান শিক্ষক ঘটনার কথা জানতে পারেন। অভিযোগ, এ ব্যাপারে জানতে চাওয়ায় কাশীনাথবাবু প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। ঘটনার কথা গ্রামে ছড়াতে ছেলেটির বাড়ির লোক এবং আরও কিছু অভিভাবক স্কুলে আসেন। আগে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যখন এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছিল তখন বিষয়টি থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। শিক্ষা দফতরের তরফে তদন্তও হয়। পরিচালন সমিতিও তাঁকে সতর্ক করে। বনিবনা না হওয়ায় স্কুলের অধিকাংশ সহকর্মী কাশীনাথবাবুকে এড়িয়ে চলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন