ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
বাবাকে খুন করতে প্রেমিকের সঙ্গেই ষড়যন্ত্র করেছিল কিশোরী নিজেই! গুজরাতে পাদরা গ্রামের এক ৪৫ বছর বয়সি ব্যক্তি খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। অভিযোগ, কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক মানতে রাজি ছিলেন না ওই ব্যক্তি। বার বার বলেও লাভ হয়নি। তাই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে বছর সতেরোর কিশোরী।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৬ থেকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই কিশোরী তার বাবা-মাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তিন দিনই ব্যর্থ হয়। অবশেষে ১৮ ডিসেম্বর রাতে বাবা-মায়ের খাওয়ার সঙ্গে কড়া ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় ওই কিশোরী। তাঁরা ঘুমিয়ে পড়লে প্রেমিককে ডেকে পাঠায় সে। ঘুমন্ত অবস্থায় প্রেমিকার বাবা শানা চাভদাকে ছুরির আঘাতে খুন করেন রঞ্জিত ওয়াঘেলা নামে ওই যুবক।
শুক্রবার সকালে নিজের ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় শানাকে। তার পরই রঞ্জিতকে নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেন মৃতের দাদা মতি। তিনি পুলিশকে জানান, গত জুলাইয়ে তাঁর ভাইঝি রঞ্জিতের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। তখন তাঁর ভাই রঞ্জিতের বিরুদ্ধে থানায় পকসো আইনে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় রঞ্জিতকে। পরে আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, সপ্তাহ দুই আগে ওই কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রঞ্জিত। সে সময় শানার সঙ্গে অশান্তি হয় তাঁর। শানাকে খুনের হুমকিও দেন রঞ্জিত। তিনি শানাকে শাসিয়ে যান, তাঁর মেয়েকে বিয়ে করবেনই। কেউ যদি বাধা দেন তবে খুন করতেও দ্বিধা করবেন না। তবে সেই হুমকিতে তেমন আমল দেননি শানা। তার পরেও মেয়েকে রঞ্জিতের সঙ্গে মিশতে বাধা দেন। তখনই তাঁকে খুনের ষড়যন্ত্র করে ওই কিশোরী।
ভদোদরার পুলিশ সুপার সুনীল আগরওয়াল জানান, মৃত শানা তাঁর ছোট কন্যার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে ঘোর আপত্তি ছিল। তাঁর বড় কন্যা পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেছিলেন। তাই ছোট কন্যার সম্পর্ক কোনও ভাবেই মানতে রাজি ছিলেন না শানা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরী মায়ের সঙ্গে ঘুমাতেন। বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে রাখতেন শানা। ১৬ ডিসেম্বর থেকে পর পর দু’রাত রাতে মা-বাবাকে পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিল ওই কিশোরী। কিন্তু তার মা পানীয়টি না-খাওয়ায় পরিকল্পনা সফল হয়নি। ১৮ ডিসেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে কৌশলে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় কিশোরী। সেই খাবার খেয়ে সকলে ঘুমিয়ে পড়লে বন্ধ ঘর থেকেই প্রেমিককে ফোন করে সে। তার পরেই ঘটে হত্যাকাণ্ড।