Hooghly

এ বার আন্দোলনে অস্থায়ী কর্মীরা, জেরবার পুরসভা

বেতনবৃদ্ধি-সহ একগুচ্ছ দাবিতে গত শুক্রবার থেকে পুরসভার সাফাইকর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৩:১৯
Share:

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী করণিকদের বিক্ষোভ। ছবি: তাপস ঘোষ

বেতনবৃদ্ধির দাবিতে টানা প্রায় এক সপ্তাহ কর্মবিরতির পরে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় সাফাইকর্মীরা বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দিলেন। ঘটনাচক্রে একই দিনে বেতনবৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামলেন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা।

Advertisement

বেতনবৃদ্ধি-সহ একগুচ্ছ দাবিতে গত শুক্রবার থেকে পুরসভার সাফাইকর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করেন। ফলে, জেলা সদর চুঁচুড়ার পথ-ঘাটে ক্রমশ উঁচু হয় জঞ্জালের স্তূপ। ভোগান্তিতে পড়েন শহরবাসী। চাপে পড়ে প্রশাসন আন্দোলনকারীদের বেতন বাড়ানোর দাবি মেনে নেয়। দাবি মেটায় এ দিন কাজে যোগ দেন সাফাইকর্মীরা। কিন্তু এ দিন-ই আবার পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা আন্দোলন শুরু করায় পুর-প্রশাসকদের উপরে নতুন করে চাপ তৈরি হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজ্য সরকারের বেতন কাঠামোর নিরিখে তাঁদের বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি বিধি ভেঙে পুরসভায় সম্প্রতি যে নিয়োগ হয়েছে, তা পুরোপুরি বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি দাবিকে সামনে রেখে তাঁরা এ দিন টানা তিন ঘণ্টা পুর-প্রশাসকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভের জেরে বিদায়ী পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় এবং বিদায়ী উপ-প্রধান অমিত রায়-সহ অন্যেরা দীর্ঘক্ষণ কার্যত আটকে পড়েন তাঁদের ঘরে। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় বর্তমানে বিভিন্ন পদে মোট ৮৪ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন।

Advertisement

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, বিধি ভেঙে পুরসভায় যে নিয়োগ হয়েছে, তা বাতিল বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ওই কাজে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের এক মুখপত্র বলেন, ‘‘ঘোষিত কোনও ব্যবস্থাই এ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকার নিয়োগ বাতিলের ঘোষণা করলেও ৫৬ জন বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অবিলম্বে তাঁদের কাজ বন্ধ করতে হবে। নিয়োগে বিধিভঙ্গের যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত করে সরকার রাজধর্ম পালন করুক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এখন সারা মাস কাজ করে ৪ হাজার ৭০০ টাকা বেতন পাই। বর্তমান বাজারে এই সামান্য বেতনে কেউ সংসার চালাতে পারে?’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘কেউ দশ বছর, কেউ আবার কুড়ি বছর বা তার বেশি সময় ধরে নামমাত্র বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছি। এর পরেও দেখা গেল, পুরসভায় কর্মী নিয়োগ হতেই জলপাইগুড়ি, মালদা, মুর্শিদাবাদ থেকে নেতা ও পুরসভার উচ্চপদস্থ আমলাদের আত্মীয়েরা চাকরি পেল। আমরা পেলাম না। আমাদের মধ্যে অনেক শিক্ষিত এবং যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী পুরসভার বহু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু উপযুক্ত বেতন দেওয়া হয় না।’’ বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান অমিত রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা বিক্ষোভকারীদের দাবি জেনেছি। তাঁদের দাবি এবং ক্ষোভ সহানুভুতির সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছি ওঁদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন