Coronavirus Lockdown

মিলল না রক্ত, মৃত্যু থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উলুবেড়িয়া বাড়বেড়িয়া মধ্য পাড়ার নিশা বছর তিনেক আগে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়। তার জেরে নবম শ্রেণিতেই পড়া বন্ধ হয়ে যায় তার। 

Advertisement

সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২০ ০৪:১৭
Share:

নিশার মা ও ভাই। —নিজস্ব িচত্র

এপ্রিল মাসে রক্ত নেওয়ার কথা ছিল থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত নিশা ডাল (১৭)-এর। কিন্তু লকডাউনের জেরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি পরিজনরা। বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় নিশাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল, তখন সেখানে রক্ত মেলেনি। রক্তদাতা খোঁজার আগেই মারা যায় নিশা।

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উলুবেড়িয়া বাড়বেড়িয়া মধ্য পাড়ার নিশা বছর তিনেক আগে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়। তার জেরে নবম শ্রেণিতেই পড়া বন্ধ হয়ে যায় তার। প্রতি মাসেই তাকে রক্ত দিতে হয়। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে রক্ত নিয়েছিল নিশা। নিয়ম অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে ফের রক্ত নেওয়ার কথা। নিশার বাবা নিমাই ডাল কলকাতার একটি সংস্থার গাড়ি চালান। লকডাউনের জেরে তিনি মার্চের শেষ থেকেই বাড়ি ফিরতে পারেননি। বাড়িতে রয়েছেন নিশার সৎ মা ও এক পিসি। লকডাউনের জেরে এপ্রিল মাসে তাঁরা নিশাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি।

গত বুধবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে নিশা। শুরু হয় খিঁচুনি। ওই অবস্থায় তাকে নিয়ে তার মা যান উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, দ্রুত রক্তের প্রয়োজন তার। নিশার মা রূপালিদেবীর অভিযোগ, ‘‘উলুবেড়িয়া ব্লাড ব্যাঙ্কে ‘ও পজিটিভ’ রক্ত ছিল না। রক্তদাতা জোগাড়ের আগেই সব শেষ।’’

Advertisement

মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন নিমাইবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখানে থাকলে আর হয়তো একটু সময় পেতাম। তবে পুরো এপ্রিল মাস মেয়েটাকে বাড়িতে ফেলে রাখা আমাদের ঠিক হয়নি।’’

উলুবেড়িয়া হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন খাঁড়ার বলেন, ‘‘এখন রক্তদান শিবির বন্ধ। ফলে

রক্তের জোগান নেই। ফলে সব সময় সব গ্রুপের রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। তবে, এই ঘটনায় পরিবারের উদাসীনতাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ‘ও পজিটিভ’ গ্রুপের রক্ত সচরাচর পাওয়া যায়। গোটা এপ্রিল মাস মেয়েটিকে বাড়িতে রেখে দেওয়া হল, সেটাই বুঝলাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন