ভাবাদিঘিতে রেলপথ হবেই, বললেন মমতা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোঘাটের ওসি সমীর সরকারের কাছে জানতে চাইলেন, “ভাবাদিঘিতে কি হচ্ছে? জমিটা খুঁজছো তো!” উত্তরে ওসি বলেন, ‘‘৫ একর জমি পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু কিছু বাইরের লোক আসায় গোলমাল হচ্ছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ০৩:১২
Share:

নিজের অবস্থানেই মুখ্যমন্ত্রী।

ভাবাদিঘি নিয়ে নিজের অবস্থান বজায় রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

বিষ্ণুপুর-তারকেশ্বর রেল সংযোগের ক্ষেত্রে গোঘাটের ভাবাদিঘির উত্তর দিকের একাংশ বুজিয়ে রেললাইন পাততে চায় রেল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ চান, দিঘি বুজিয়ে নয়, দিঘির উত্তর দিকের জমি দিয়েই রেললাইন পাতা হোক। সেই দাবিতে আন্দোলনেও নামেন গ্রামবাসীদের একাংশ। সেই টানাপড়েনে থমকে রয়েছে ওই রেল লাইনের কাজ। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ওই রেললাইন হবেই। এর আগে বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকেও সেই বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার তারকেশ্বরে আয়োজিত হুগলি জেলার প্রশাসনিক সভাতেও তিনি জানান, ভাবাদিঘিতে রেলপথ হবেই। এ দিনের সভায় গোঘাটের ওসি সমীর সরকারের কাছে জানতে চাইলেন, “ভাবাদিঘিতে কি হচ্ছে? জমিটা খুঁজছো তো!” উত্তরে ওসি বলেন, ‘‘৫ একর জমি পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু কিছু বাইরের লোক আসায় গোলমাল হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী তখন বলেন, “আমি জানি। ওরা সিপিএমের। আমার স্বপ্নের প্রকল্প জয়রামবাটি, কামারপুকুরের রেলপথ আমি করবই। ওদের দিঘি দরকার। পাল্টা দিঘি করে দেব আমি। মাছ চাইলে মাছ দেব। জাল চাইলে জাল দেব। যা চাইবে তাই দেব। টাকা চাইলেও টাকা দেব। প্রকল্প আটকাবে না। এটা মাথায় রাখবেন।”

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলির তারকেশ্বর থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পর্যন্ত ৮২.৫ কিলোমিটার রেল প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। পরে ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী হওয়ার পরে ফের ওই প্রকল্পটিতে গুরুত্ব দেন তিনি। ২০১২ সালের ৪ জুন আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর হয়ে হাওড়া পর্যন্ত রেল চলাচলের উদ্বোধন করেন মমতা। পরে কামারপুকুর পর্যন্ত রেলপথ তৈরির কাজ শেষ। বর্তমানে গোঘাট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু জটিলতা হয় গোঘাটের ভাবাদিঘি এলাকায় রেল লাইনের কাজ করতে গিয়ে। লাইন পাততে পুরোটা না হলেও ৫২ বিঘার ওই জলাশয়ের একাংশ বুজিয়ে ফেলার কথা ভেবেছিল রেল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ দাবি তোলেন, প্রাচীন ওই দিঘিটি বো়জানো যাবে না। সেটিকে অক্ষত রেখেই লাইন পাততে হবে।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে টিভি খুলে বসেছিলেন ভাবাদিঘির মানুষ। দিঘি বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায়ের বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ছেলে ভোলানো ছড়া কেটেছেন। আমরা এসব মানব নাকি!” তাঁর দাবি, ‘‘নতুন দিঘি, মাছ চাষের ব্যবস্থা, চাকরি— অত টাকা নষ্টের দরকার কী? আমাদের দাবি মতো দিঘির উত্তরপাড় দিয়ে রেল লাইন গেলে সেই টাকার সিকি টাকাও খরচ হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন