আলো জ্বলবে কবে, অপেক্ষায় উড়ালপুল

সূর্য ডুবলেই আঁধার নামে এখানে। ভরসা তখন গাড়ির হেডলাইট। শহরে উন্নয়ন নিয়ে নানা গালভরা দাবি করে প্রশাসন। কিন্তু শ্রীরামপুরের সিকি শতাব্দী প্রাচীন উড়ালপুল যেন পিছনে হাঁটছে!

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৩
Share:

আধাঁরে: শ্রীরামপুর ফ্লাইওভারের ছবি। নিজস্ব চিত্র

সূর্য ডুবলেই আঁধার নামে এখানে। ভরসা তখন গাড়ির হেডলাইট।

Advertisement

শহরে উন্নয়ন নিয়ে নানা গালভরা দাবি করে প্রশাসন। কিন্তু শ্রীরামপুরের সিকি শতাব্দী প্রাচীন উড়ালপুল যেন পিছনে হাঁটছে! উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে গাফিলতির হাজারো অভিযোগেও হুঁশ নেই প্রশাসনের।

এক বছর আগে কলকাতার পোস্তায় নির্মীয়মাণ উড়ালপুল ভেঙে পড়ে। কয়েক মাস আগে মগরায় নির্মীয়মাণ একটি উড়ালপুলের একাংশও ভেঙে পড়ে। বাঁশবেড়িয়ার ঈশ্বরগুপ্ত সেতুতে ফাটল ধরে। এই সব ঘটন‌ার জেরে উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরে শ্রীরামপুর উড়ালপুলের জীর্ণ সড়ক সংস্কার করে পূর্ত দফতর। কিন্তু আলো জ্বালানোর কোনও ব্যবস্থাই করেনি তারা।

Advertisement

অথচ, আগে এমনটা ছিল না। এক সময় সেখানে আলো জ্বলত। এখন অনেক বাতিস্তম্ভ থেকে বাতি উধাও। কোনও বাতি আবার কার্যত ঘাড় মটকে ভেঙে পড়েছে। অনেক স্তম্ভে আবার বাতি থাকলেও সেগুলি নিভেই থাকে। ফলে, সন্ধ্যা হলেই উড়ালপুলে চলাচল করতে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। গাড়ি-চালকদের হেডলাইটই ভরসা। কিন্তু টোটো বা সাইকেল চালকদের কার্যত প্রাণ হাতে করে চলতে হয়। সংশ্লিষ্ট দফতরের সমন্বয়ের অভাবেই এই পরিস্থিতি বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ।

উড়ালপুলের মাঝখানে বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। সেখানে বাস, অটো, টোটো, ট্রেকার দাঁড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্ধকারে খুব সাবধানে চলাফেরা করতে হয়। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, অন্ধকার সিঁড়ির ধাপে অসামাজিক কাজকর্ম চল‌ে। সন্ধ্যার পরে মহিলারা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সাহস পান না।

অমিতাভ দে ন‌ামে মাহেশের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘সন্ধ্যার পরে মোটরবাইক নিয়ে যেতে হলে উড়ালপুল এড়িয়ে চলি। ভিড় ঠেলে উড়ালপুলের নীচের রাস্তা দিয়ে লেভেল ক্রসিং টপকে যেতে হয়।’’ অনেকে আবার বলছেন, ‘‘এখন সকালেও মোটরবাইকে আলো জ্বালাতে হচ্ছে। কিন্তু সন্ধ্যা ঘনালে উড়ালপুলে আলো জ্বলছে না। হাস্যকর। এটা কি ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফে’র নমুনা!’’

শ্রীরামপুর পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার সুমিত দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। ওখানে আলোর বিষয়টি পূর্ত দফতরের বিদ্যুৎ বিভাগের দেখার কথা।’’ এর আগে পূর্ত দফতরের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছিল, ওই উড়ালপুলে আলো লাগানোর দায়িত্ব স্থানীয় পুরসভার। এ ব্যাপারে শ্রীরামপুর পুরসভার পূর্ত বিভাগের চেয়ারম্যান ইন-কাউন্সিল উত্তম রায়ের বক্তব্য, ‘‘পুরসভা কোনও দিন ওখানে আলো লাগায়নি। কেউ হয়তো পুরসভার ঘাড়ে দায় চাপাতে চেয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট দফতর যদি আলো লাগাতে অপারগ হয়, পুরসভাকে চিঠি লিখে জানাক। পুরসভা তখন বিষয়টি নিশ্চয়ই ভেবে দেখবে।’’

আলো কবে জ্বলবে, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে উড়ালপুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন