পাশেই আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী। ঘরের দরজা-জানলা বন্ধই ছিল। মিনিট পঁচিশ পরে ফিরে এসে দেখেন, পিছনের দরজা ভেঙে আলমারি থেকে কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের গয়নাগাটি এবং নগদ টাকা সাফ করে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। রাতের অন্ধকারে নয়, মঙ্গলবার দিনের আলোয় এমনই ঘটনা ঘটেছে হুগলির শ্রীরামপুরের বল্লভপুর এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
দিন কয়েক আগেই দুপুরে শহরের লক্ষ্মীঘাট এলাকার একটি বাড়ি থেকে নগদ টাকা-সহ অন্য মূল্যবান সামগ্রী খোওয়া যায়। আশ্বাস দিয়েও সে সবের সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। সম্প্রতি শহরের নওগাঁর মোড়ের কাছে অরবিন্দ পার্ক এলাকাতেও বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে দুষ্কৃতীরা সেখানে ঢুকে সোনার গয়না এবং নগদ টাকা হাতিয়ে পালায় বলে অভিযোগ। পর পর এমন ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। একই দুষ্কৃতী দল বাড়ি ফাঁকা থাকার সময় সুযোগ বুঝে লুঠপাট চালাচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের ধরা এবং চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের জন্য সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
এ দিনের ঘটনা ঘটে বল্লভপুরে রাধাবল্লভ মন্দিরের পিছনেই। সেখানে দোতলা বাড়িতে মা শক্তিদেবীকে নিয়ে থাকেন কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরে দেবজিৎ চক্রবর্তী। এ দিন সকালে দেবজিৎবাবু অফিসে বেরিয়ে যান। বাড়িতে শক্তিদেবী একাই ছিলেন। তিনি জানান, দিন কয়েক আগে পাশেই এক আত্মীয়ের বিয়ে হয়। এ দিন দুপুর একটা নাগাদ তিনি ওই বাড়িতে যান। মিনিট পঁচিশ পরে ফিরে এসে দেখেন, ঘর লণ্ডভণ্ড। দুষ্কৃতীরা জিনিসপত্র গোছগাছ করছে। শক্তিদেবীর উপস্থিতি টের পেয়েই তারা পালায়। তাড়াহুড়োর চোটে এক জন তার জুতো ফেলে যায়। ঘরে ঢুকে শক্তিদেবী দেখেন, আলমারি খোলা। বিছানাময় ছড়িয়ে আছে গয়নার ফাঁকা বাক্স। আলমারিতে থাকা নগদ টাকাও উধাও। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। খবর পেয়ে দুপুরেই দেবজিৎবাবু ফিরে আসেন। খবর দেওয়া হয় শ্রীরামপুর থানায়। আইসি নন্দদুলাল ঘোষ বাহিনী নিয়ে সরেজমিনে তদন্তে আসেন। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ওই পরিবারের তরফে। দুই দুষ্কৃতীর চেহারার বিবরণ পুলিশকে জানানো হয়। দুষ্কৃতীর ফেলে যাওয়া জুতো তদন্তের স্বার্থে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে খবর, বাড়ির পিছনের দিকের গ্রিলের গেটে তালা দেওয়া ছিল না, কিন্তু দরজায় ভিতর থেকে খিল আঁটা ছিল। দুষ্কৃতীরা সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। শক্তিদেবী পাশের বাড়িতে যেতেই তারা দরজার পাল্লা ভেঙে ফেলে। এক তলার একটি ঘরে আলমারিতে গয়না, টাকা ছিল। পাশেই চাবি রাখা ছিল। সহজেই আলমারি খুলে গয়নাগাটি হাতিয়ে নেয় তারা।
রাধাবল্লভ মন্দির চত্বরে দিনভর লোকজনের আনাগোনা লেগেই থাকে। তার পাশেই দুপুরবেলা এমন ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন।