বিধানসভা ভোটে তাঁরা কেউ বিরোধীদের মিছিলে হেঁটেছিলেন, কেউ ভোটে কাজ করেছিলেন। এই ‘অপরাধে’ এমন ১৬ জনের দোকান তিন মাসের উপর বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আরামবাগের বাতানল অঞ্চলের ঘটনা। অভিযোগ, এর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে বার বার দরবার করেও পরিস্থিতি বদলায়নি। সুবিচার চেয়ে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা।
ওই ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত ১৯ মে ফল বের হওয়ার দিন থেকে তৃণমূলের লোকজন বাতানল, নারায়ণপুর, ভেলে, ষষ্ঠীপুর গ্রামের বাজারগুলিতে গিয়ে সিপিএম সমর্থক দোকানদারদের নাম ধরে ধরে হুমকি দেন। দোকান ভাঙচুর করা হয়। পরের দিন দোকান খুলতে গেলে ব্যবসায়ীদের মারধর করা বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ী বাতানলের উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়, ভোলা ধাড়া, নারায়নপুর ও ভালিয়া গ্রামের চন্দন চক্রবর্তী, লালু দাস, ষষ্ঠীপুরের হাতুড়ে ডাক্তার ওয়াসিম আলিদের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কালাম মুন্সী বলে দিয়েছেন, ‘তিনি দলের ছেলেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি স্বপন নন্দী বলে চলেছেন, ‘বিষয়টা দেখছি।’ আর বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার কাছে গেলেই বলছেন, ‘ওটা ব্লক সভাপতিই দেখবেন।’ পুলিশ বলছে, কারা দোকান বন্ধ করতে বলছে তাদের নামে লিখিত অভিযোগ করতে। সেটা এলাকায় থেকে করা সম্ভব নয় তা তাঁরাও ভাল করে জানেন।’’
সিপিএমের প্রাক্তন জোনাল সদস্য বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে উৎপলবাবুর দাবি, ‘‘২০০৯ সাল সিপিএমের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তারপরেও আমাদের দোকান বন্ধ রাখার ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনও সুরাহা না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছি।’’ সরাসরি না হলেও অভিযোগের কথা স্বীকার করে আরামবাগের বিধায়ক তৃণমূলের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, ‘‘দোকান খোলার বিষয় নিয়ে ২৫ অগস্ট বৈঠক ডেকেছি। আশা করি সেখানেই সমাধান করতে পারব।’’ তাঁর সংযোজন, “আমরা হয়তো দ্রুত দোকানগুলি খুলে দিতে পারতাম। সেটা স্থায়ী সমাধান হত না। এলাকার পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এই বিলম্ব।’’ একই বক্তব্য দলের ব্লক সভাপতি স্বপন নন্দীও। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।