দলীয় প্রধানের সঙ্গে শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর পঞ্চায়েতের কিছু তৃণমূল সদস্যের আকচা-আকচি অব্যাহত।
দিন কয়েক আগে প্রধান কণিকা ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেও নেতৃত্বের আশ্বাসে তা প্রত্যাহার করে নেন পঞ্চায়েতের কিছু তৃণমূল সদস্য। কিন্তু প্রধান দলীয় নির্দেশ মানেননি, এই অভিযোগ তুলে সম্প্রতি ইস্তফাপত্র জমা দেন ১৩ জন সদস্য। তবে, সোমবার ইস্তফাপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা দিলেন তাঁরা। এক সঙ্গে এত জন সদস্যকে আটকাতে আসরে নামতে হয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিডিও তমালবরণ ডাকুয়া জানান, ইস্তফাপত্র প্রত্যাহারের আবেদন স্ক্রুটিনি করে দেখা হচ্ছে।
ওই পঞ্চায়েতের ৩০টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ২১টি। ৯টি সিপিএমের। কিছু দিন আগে নানা অভিযোগে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন ১৪ জন তৃণমূল সদস্য। তাঁদের দাবি, দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দু’পক্ষকে বৈঠকে ডেকে প্রধানকে নির্দেশ দেন, উপপ্রধান নির্মল চক্রবর্তীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। সেই কারণে তাঁরা ভোটাভুটিতে হাজির হননি। কিন্তু এক মাস কেটে গেলেও প্রধান ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। তিনি দাবি করে আসছিলেন, দল তাঁকে এমন কোনও নির্দেশ দেননি। এই পরিস্থিতিতে দিন কয়েক আগে নির্মলবাবু-সহ ক্ষুব্ধ ১৩ জন সদস্য বিডিও-র কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন।
তৃণমূল শিবিরের খবর, দলীয় সদস্যেরা ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ায় সাংসদ কল্যাণবাবু চটে যান। রবিবার তিনি প্রধানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, দলের কানাইপুর অঞ্চল সভাপতি ভবেশ ঘোষকে জানিয়ে দেন, দলের স্বার্থে প্রধানকে পদত্যাগ করতেই হবে। নির্মলবাবুদের ইস্তফা তুলে নেওয়ার আর্জিও জানান সাংসদ।
নির্মলবাবু বলেন, ‘‘সাংসদের সম্মান এবং আশ্বাসে আমরা ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করলাম। প্রধান সরলেই কানাইপুরের প্রকৃত উন্নয়ন হবে।’’ সাংসদ বলেন, ‘‘নির্মলবাবুরা কেন ইস্তফা দেবেন! এ বার সুষ্ঠু ভাবে যাতে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম চলে সেই ব্যবস্থাও করতে হবে।’’
প্রধান কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতোই ওখানে কাজ হবে। প্রধান উপপ্রধানকে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন বলে ফিরহাদ হাকিম নির্দেশ দিয়েছিলেন।’’ এর আগে তপনবাবু অবশ্য জানিয়েছিলেন, প্রধানকে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা দল বলেনি।