জামিন অধরাই

নাকে অক্সিজেনের নল নিয়েই আদালতে প্রোমোটার

প্রতারণার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। তা ‘এড়াতে’ নাকে অক্সিজেনের নল লাগানো অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্সে আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০১
Share:

প্রতারণার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। তা ‘এড়াতে’ নাকে অক্সিজেনের নল লাগানো অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্সে আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেন। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মক্কেলের জামিন চেয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। কিন্তু জামিন নাকচ করে মক্কেল প্রোমোটারকে জেল হাজতে পাঠানোর ‌নির্দেশ দিলেন বিচারক। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে।

Advertisement

প্রোমোটারের দাখিল করা হাসপাতালের কাগজপত্র দেখে আদা‌লতের পর্যবেক্ষণ, এখনই তাঁর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার নেই। যদিও অসুস্থতার কথা বলায় জেল থেকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই প্রোমোটারকে। পরীক্ষার পর তাঁর শরীর থেকে অক্সিজেনের নল খুলে দেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, অক্সিজেন দেওয়ার মতো শারীরিক সমস্যা তাঁর নেই। এই অবস্থায় জামিন পেতে কৌশল হিসেবেই অক্সিজেন, স্যালাইন লাগানো হয়েছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত সুশীল নাথ উত্তরপাড়ায় ‘নাথ কনস্ট্রাকশন’ নামে প্রোমোটারির ব্যবসা করেন। গত কয়েক বছরে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে সুশীল‌বাবু ও তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ফ্ল্যাটের জন্য চুক্তি করে এবং সেই বাবদ টাকা নেওয়ার পরেও উপভোক্তাদের ফ্ল্যাটের দখল দেননি সুশীলবাবু। বারবার তদ্বির করেও ফল না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন কয়েক জন। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলায় হেরে যাওয়ায় আদালত সুশীলবাবুকে ফ্ল্যাটের দখল সংশ্লিষ্ট ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়ার এবং রেজিস্ট্রি করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশ তিনি মানেননি।

Advertisement

গত ৩০ মে একটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সুশীল। ওই মামলায় এক লক্ষ টাকার ব্যত্তিগত বন্ডে এবং ফ্ল্যাটের দখল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বুঝিয়ে দিয়ে ২২ জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রি করে দেবে‌ন, এই শর্তে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। ২২ জুন আদালতে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি যাননি। পরবর্তী ১১ জুলাইয়েও আদালতে হাজির হননি। এর পরেই আদালত তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

গত সোমবার ওই প্রোমোটার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। একটি মেডিক্যাল সার্টিফিকেটও জমা দেন। তাতে দেখা যায়, শনিবার তিনি উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়েছিলেন। তাঁর হৃদরোগ রয়েছে। চিকিৎসক কয়েকটি ওষুধ লিখে তাঁকে ছেড়ে দেন।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, তিনি রোগী হতে পারেন, কিন্তু তাঁর দাখিল করা হাসপাতালের কাগজেই স্পষ্ট যে, এখনই তাঁর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার নেই। এরপরেই জামিনের আবেদন‌ নাকচ করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সভাপতি পার্থসারথি দাস। হুগলি জেল সুপারকে ওই ব্যক্তির প্রয়োজনীয় চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।

আগামী ১১ অগস্ট ওই প্রোমোটারকে ফের এজলাসে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন