সাঁকরাইলে লেভেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক পদস্থ কর্তা জানান, যেহেতু রেলের সঙ্গে বসে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা খরচের হিসাব করেছেন তাই রাজ্য সরকারের সম্মতি পাওয়াটা কোনও সমস্যা হবে না। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘প্রকল্পটি চূড়ান্ত পর্যায়েই রয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুর পরিকল্পনাও করা হয়েছে।’’

Advertisement

নুরুল আবসার 

সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩৬
Share:

দীর্ঘ: অপেক্ষার এই ছবি বদলাবে, আশায় এলাকাবাসী। নিজস্ব চিত্র

যানজট এড়াতে এ বার সাঁকরাই‌ল লেভেল ক্রসিংয়ের উপরে রেলওয়ে উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল ও রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর।

Advertisement

ইতিমধ্যে রেল ও রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়ার একসঙ্গে বসে উড়ালপুলের নকশা চূড়ান্ত করেছেন। মোট খরচ হবে ৮৩ কোটি টাকা। তার মধ্যে রাজ্যের ৫৭ কোটি টাকা আর বাকি ২৬ কোটি রেলের। নকশা এবং খরচের হিসাব পাঠানো হয়েছে রেলের অর্থ বিভাগে। সেখান থেকে এটি অনুমোদিত হয়ে এলে তা যাবে রাজ্য সরকারের অর্থ দফতরে। রাজ্য সরকার সম্মতি দিলেই রেল তার অংশের জন্য টেন্ডার করবে। রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর তার অংশের কাজের জন্য আলাদা টেন্ডার করবে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক পদস্থ কর্তা জানান, যেহেতু রেলের সঙ্গে বসে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা খরচের হিসাব করেছেন তাই রাজ্য সরকারের সম্মতি পাওয়াটা কোনও সমস্যা হবে না। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘প্রকল্পটি চূড়ান্ত পর্যায়েই রয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুর পরিকল্পনাও করা হয়েছে।’’

Advertisement

হাওড়ার বুক চিরে গিয়েছে হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের রেলপথ। এই রেলপথের দু’দিকে রয়েছে জেলার সব গুরুত্বপূর্ণ এ‌লাকা। হাওড়া-খড়্গপুর হল ব্যস্ততম রেলপথ। ঘন ঘন ট্রেন চলে এই রেলপথে। ফলে সেই সময় লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ রাখতে হয়। তার জেরে লেভেল ক্রসিংয়ের দু’দিকে যানজটের ছবিটা খুব চেনা। আবার গেট খুলে দিলেও যানজট কাটতে বেশ সময় লাগে। তখন আবার ট্রেন দাঁড় করিয়ে দিতে হয়।

এই সমস্যা মেটাতে এর আগে মৌড়িগ্রাম, বাগনান এবং উলুবেড়িয়াতে রেল ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে রেলওয়ে উড়ালপুল করেছে। বাউড়িয়াতেও লেভেল-ক্রসিংয়ের উপরে রেলওয়ে উড়ালপুল হচ্ছে। তার টেন্ডার করেছে রেল। রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রের খবর তারাও তাদের অংশের কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। পরবর্তী উড়ালপুলটি হচ্ছে সাঁকরাইলে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রেলওয়ে উড়ালসেতু হলে জেলার বিভিন্ন এ‌লাকায় মানুষ সড়ক পথে যেমন সহজে যাতায়াত করতে পারবেন, আবার ট্রেন চলাচলের বিঘ্নও দূর হবে।’’

সাঁকরাইলে বিভিন্ন স্কুল, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাজার, চটকল সবই স্টেশনের দক্ষিণ দিকে পড়ে। মাঝখানে রেললাইন থাকায় উত্তর দিকের বিভিন্ন অংশ থেকে যাঁরা এই সব এল‌াকায় আসেন তাঁরা বিপাকে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ ধরে লেভেল-ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ থাকে। আবার ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সাঁকরাইলের যে সব মানুষ কলকাতায় যেতে চান তাঁরাও অসুবিধায় পড়েন ওই লেভেল- ক্রসিংয়ের জন্যই। বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে যেতে হলেও বাধা এই

লেভেল-ক্রসিং। শুধু তাই নয়, সাঁকরাইল থানার অনেকটা অংশ পড়ে স্টেশনের উত্তর দিকে। এই সব এলাকায় গোলমাল হলে পুলিশের গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়। রেলওয়ে উড়ালসেতু তৈরি হলে এই সমস্যা মিটে যাবে বলেই আশা।

দক্ষিণ সাঁকরাইলের বাসিন্দা সেখ মইনুদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা বহুদিন ধরেই দাবি জানিয়েছিলাম এখানে একটি উড়ালপুলের জন্য। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন