অসমাপ্ত: উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিং-এর উপরে নির্মীয়মাণ উড়ালপুলটির কাজ থমকে। ফাইল ছবি
জুড়তে হবে রেল উড়ালপুলের মাত্র ১০০ মিটার। তার জন্য সময় বের করতেই সময় পার!
১০ ঘণ্টা না ছ’ঘণ্টা! কতক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে, তা ঠিক করতেই কেটে গিয়েছে এক বছর। শেষমেশ সেই সিদ্ধান্ত হলেও দিন-তারিখ কবে? তা এখনও অনিশ্চিত।
লোকসভা নির্বাচনের আগে উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিং-এর উপরে নির্মীয়মাণ উড়ালপুলটির কাজ আদৌ শুরু হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের কর্তারা। কারণ, ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সরকারি কর্মীরা এ বার ভোটের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। রেলের পক্ষ থেকে ট্রেন বন্ধের তারিখ পাওয়া গেলেও কাজটি শুরু করতে সমস্যা হতে পারে।
উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক তুষার সিংলা বলেন, ‘‘আমরা রেলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’’ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয়কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘১০ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে এটা চূড়ান্ত হয়েছে। তারিখ নিয়ে আলোচনা চলছে।’’
উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ে যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেই সমস্যা এড়াতেই প্রায় ৪২ কোটি টাকায় উড়ালপুলটির নির্মাণকাজ শুরু হয় প্রায় তিন বছর আগে। উড়ালপুলটি নির্মাণ করছে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর। রেলের অংশটুকুর জন্য খরচ দিচ্ছেন রেল কর্তৃপক্ষ। গত বছর মার্চেই সিংহভাগ কাজ হয়ে যায়। বাকি আছে রেললাইনের উপরের অংশটুকু (১০০ মিটার) জোড়ার কাজ। কিন্তু এই অংশটুকু জুড়তে হলে রেল চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
রেল ও রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রের খবর, প্রথমে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ধাপে ধাপে ১২ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ সেই প্রস্তাব নাকচ করে জানিয়ে দেন, হা্ওড়া-খড়্গপুরের মতো ব্যস্ত শাখায় এতক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। বড়জোর ৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখা যায়। তা-ও ধাপে ধাপে নয়, টানা। এরপরে সংশোধিত প্রস্তাবে পূর্ত (সড়ক) দফতর ১০ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবও নাকচ হয়। রেলের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, তাদের সেতু বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে-কলমে দেখিয়ে দেবেন কী ভাবে ৬ ঘণ্টার মধ্যে সেতুর দু’টি মুখ জুড়ে দেওয়া যায়। সেইমতো গত সেপ্টেম্বরে খড়্গপুর ডিভিশন থেকে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা উলুবেড়িয়ায় আসেন। পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করেন। তখনকার মতো পূর্ত (সড়ক) দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়ে দেন, তাঁরা এ বিষয়ে পরে মতামত দেবেন। মাসখানেক পরে পূর্ত (সড়ক) দফতরের পক্ষ থেকে রেলকে জানিয়ে দেওয়া হয় ১০ ঘণ্টাই ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। নয়তো কাজটি করা যাবে না। আর আপত্তি করেননি রেল কর্তৃপক্ষ।
গত জানুয়ারি মাসে ট্রেন বন্ধ রাখার সময়সীমা স্থির হলেও দিনক্ষণ এখনও স্থির হয়নি। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অব্যাহত।