বাসের ছাদে যাত্রী, অভিযানে নামল পরিবহণ দফতর

ভাঙতে হবে সিঁড়ি, নির্দেশ  হাওড়াতেও

‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ ছাড়াও পথ নিরাপত্তা বাড়াতে এবং দুর্ঘটনা রোধে নানা কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য সরকার। তা সত্ত্বেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে এক শ্রেণির বাস-মালিক এবং চালক-কন্ডাক্টর পুলিশ প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বাসের ছাদে যাত্রী তোলেন বলে অভিযোগ। এর জেরে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির নজিরও রয়েছে।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৮ ০৮:১০
Share:

ঝুঁকি: এই ছবি কি বদলাবে, প্রশ্ন সেটাই। ফাইল ছবি

পরিবহণ দফতরের নির্দেশমতো বাসের ছাদে যাত্রী তোলা রুখতে গত মাস থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে হুগলিতে। এ বার সেই উদ্যোগ হাওড়াতেও।

Advertisement

শুক্রবার উলুবেড়িয়ায় মুম্বই রোডে অভিযান চালিয়ে সিঁড়ি এবং ছাদে বসার ঘেরা অংশ রয়েছে, এমন ১৫টি বাসের কাগজপত্র নিয়ে নেয় জেলা পরিবহণ দফতর। ওই দফতর সূত্রের খবর, চালকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাসের ছাদের ঘেরা অংশ এবং সিঁড়ি ভেঙে তার ছবি তুলে পাঠাতে হবে। তবেই কাগজপত্র ফিরে পাওয়া যাবে। অন্যথায় বাস-মালিকদের জরিমানা করা হবে। জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা পার্থ মুখোপাধ্যায় জানান, পরিবহণমন্ত্রীর নির্দেশমতো নতুন নিয়ম চালু করতে এই অভিযান শুরু হল। যে সব বাস ধরা পড়বে, তার মালিকদের জরিমানা করা হবে।

‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ ছাড়াও পথ নিরাপত্তা বাড়াতে এবং দুর্ঘটনা রোধে নানা কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য সরকার। তা সত্ত্বেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে এক শ্রেণির বাস-মালিক এবং চালক-কন্ডাক্টর পুলিশ প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বাসের ছাদে যাত্রী তোলেন বলে অভিযোগ। এর জেরে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির নজিরও রয়েছে। মাসদেড়েক আগেই ঝাড়গ্রামে একটি আদিবাসী উৎসবে যাওয়ার পথে লালগড়ে একটি বাস দুর্ঘটনায় পড়ে। মৃত যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন ছাদে। তারপর থেকেই ছাদে যাত্রী তোলার ব্যাপারে কড়াকড়ি শুরু করে রাজ্য পরিবহণ দফতর। যে সব মালিক বাসের ছাদে ওঠার সিঁড়ি এবং ঘেরা অংশ ভাঙবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার নির্দেশও রয়েছে।

Advertisement

এই নতুন নিয়মে আপত্তি তুলেছেন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর—দুই জেলার বাস-মালিকেরা। দুই জেলা থেকে প্রতিদিন অন্তত ২৫০টি বাস কলকাতা ও হাওড়ায় যাতায়াত করে। ইতিমধ্যে ওই দুই জেলাতেও বাস থেকে সিঁড়ি এবং ছাদের ঘেরা অংশ সরানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। অভিযানও চালানো হচ্ছে।

কিন্তু দুই জেলার বাস-মালিকদের দাবি, তাঁরা বাসের ছাদে যাত্রী তোলেন না। শুধু ব্যবসায়ীদের পণ্য থাকে। নতুন নিয়মে পণ্য আনতে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়বেন। ‘ইন্টার অ্যান্ড ইন্ট্রা রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য কমিটির সদস্য প্রভাত পান বলেন, ‘‘পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কলকাতা ‌এবং হাওড়ায় চলাচলকারী বাসের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বলবৎ না-করার জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী এবং পরিবহণমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব। এই নিয়মে ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বেন।’’

এই যুক্তি অবশ্য মানতে রাজি হননি হাওড়া জেলা পরিবহণ দফতরের কর্তারা। তাঁদের পাল্টা বক্তব্য, বাস পণ্য পরিবহণকারী যান নয়। ফলে, পণ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য ছাদের ঘেরা অংশ রাখার কোনও অনুমতি দেওয়া হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন