চন্দননগরে বাধা স্থানীয়দের, গাছ স্থানান্তর প্রক্রিয়া স্থগিত

দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিদরা গাছ কাটার বদলে তা স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে এ বার চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গাছ স্থানান্তরের অনুমতি দিয়েছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০১:০৮
Share:

পরিকল্পনা: এই গাছই সরানোর কথা। নিজস্ব চিত্র

প্রযুক্তির ব্যবহারে গাছ স্থানান্তরের সাক্ষী আগেই হয়েছে কলকাতা। এ বার সেই ছবিই দেখার কথা হুগলির চন্দননগরের।

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিদরা গাছ কাটার বদলে তা স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে এ বার চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গাছ স্থানান্তরের অনুমতি দিয়েছেন। কাজের জন্য চন্দননগর পরিবেশ অ্যাকাডেমিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এমন কাজে বাধ সেধেছেন চন্দননগরের ১২ নম্বর ওর্য়াডের প্রাক্তন পুর কাউন্সিলর শুভজিৎ সাউ। তাঁরই বাধায় রবিবার সকালে কাজ বন্ধ করে ফিরে আসতে বাধ্য হন পরিবেশ অ্যাকাডেমির কর্মীরা।

প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষার তাগিদে পরিবেশবিদেরা দীর্ঘদিন ধরেই গাছ কাটার বিরুদ্ধে সরব। তারপরও গাছ কাটায় লাগাম পরানো যাচ্ছে না কিছুতেই। অথচ প্রযুক্তিগতভাবে যদি গাছটিকে সরিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে সেটিকে বাঁচানো সম্ভব। কয়েক বছর আগে কলকাতার রাজারহাট এলাকায় এই পদ্ধতিতে কয়েকটি গাছকে সরানো হয়েছে। এ বার সেই তালিকায় নাম লেখানোর কথা চন্দননগরেরও।

Advertisement

চন্দননগর পুরসভা সূত্রের খবর, বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা দীপালি ও সর্বজিৎ পাল সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষকে তাঁদের আবাসনের সামনে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ স্থানান্তকরণের জন্য অনুরোধ করেন। চন্দননগর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবাসনের গ্যারেজের সামনে গাছটি থাকায় গাড়ি বের করতে অসুবিধা হচ্ছে।

এরপরই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত তারা চন্দননগর পরিবেশ অ্যাকাডেমিকে সেই দায়িত্ব দেয়। একই সঙ্গে ওই গাছটি সরানোর ক্ষেত্রে যে অর্থ ব্যয় হবে তার পুরো দায়ভার আবেদনকারীদেরই বহন করার অনুরোধ করা হয়েছে।

চন্দননগরের পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘কেন গাছটি সরানোর ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হল, সেটা পরিষ্কার নয়।’’ পরিবেশ অ্যাকাডেমির কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ সময়োচিত পদক্ষেপ করেছেন। আমরা দ্রুত ওই নির্দেশ কার্যকর করার চেষ্টা করছি।’’

শুভজিৎবাবুর অবশ্য দাবি ‘‘স্থানীয়রা কাজে বাধা দিয়েছেন। কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে না তো?’’ ওই এলাকারই এক বাসিন্দার আক্ষেপ, ‘‘পরিবেশ ভাবনায় রাজ্যের মধ্যে বরাবরই পথ দেখিয়ে এসেছে চন্দননগর। সেখানে এমন বাধা কাঙ্ক্ষিত নয়।’’ এমন ঘটনায় বিস্মিত প্রাক্তন মেয়র রাম চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, ‘‘গাছ কাটার বদলে স্থানান্তরের সুবিধা তো সকলে পেলেই ভাল। ভাল কাজে বাধা দেওয়ার কোনও কারণ না থাকলে লোকে এ সবই বলে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন