বিচারাধীন বন্দিদের সংশোধনাগার থেকে আদালতে আনার সময় নানা ঝুঁকি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কখনও বন্দি পালিয়ে গিয়েছে। আবার কখনও তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমনকী আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্তকে গুলি করে মেরে ফেলার উদাহরণও রয়েছে।
এই সমস্ত ঝুঁকি এড়াতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মামলার শুনানির ব্যবস্থা চালু হয়েছে হুগলিতে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়া জেলা আদালতে এর উদ্বোধন হয়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে এর আগে ছয়টি জেলা আদালতে এই ব্যবস্থা ছিল। এ বার তার সঙ্গে জুড়ে গেল হুগলিও। সংশোধনাগারে থাকা বিচারাধীন বন্দিদের বিচার চলাকালীন মামলার শুনানির জন্য সেখান থেকে আদালতে হাজির করার সময় নানা সমস্যায় পড়তে হতো পুলিশকে। শুনানির জন্য অভিযুক্তদের আদালতে নিয়ে আসার সময় অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পুলিশি ব্যবস্থা করা যায় না। অনেক সময় অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করে। সেক্ষেত্রে পুলিশের উপর দায়িত্ব বর্তায়। কয়েক বছর আগে কলকাতার একটি জেল থেকে অভিযুক্তদের চন্দননগর আদালতে নিয়ে আসার সময় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। যদিও পুলিশের তৎপরতায় হাতে নাতে ধরা পড়ে যায় তারা। এ ছাড়া আদালতে আনার পরে অভিযুক্তেদের হাজতের মধ্যে ভাঙচুর চালানোর মতো নজিরও রয়েছে চুঁচুড়ায়।
এই সব সমস্যা থেকে বাঁচতেই অভিযুক্তদের সশরীরে আদালতে হাজির না করে সরাসরি জেলের সঙ্গে আদালতের বিচারকের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে আদালতে হাজির হওয়া অভিযুক্তের পরিবার বৈদ্যুতিন যন্ত্রের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া দেখতে পারবেন। পাশাপাশি অন্য সমস্যাও এড়ানো যাবে।
চুঁচুড়া আদালতের সরকার পক্ষের আইনজীবী কালীপ্রসাদ সিংহ রায় বলেন, ‘‘ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি চালু হওয়ায় নানা সুবিধাও হবে। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনও অভিযুক্তের শুনানির দিন আদালত চত্বরে তার দলবল ঘোরাঘুরি করছে। এতে আদালতে যে কোনও সময় গোলমাল বেধে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার সম্ভাবনা থাকে। ভিডিও কনফারেন্স ব্যবস্থায় সে সব করার কোনও সুযোগ থাকবে না।’’