আন্দোলনেও কাজিয়া, দুই মঞ্চে দুই নেতা

বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে ওই দলের অন্দরে। রহস্য ভাঙেনি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের কথাতেও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘নেত্রী যাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁর নেতৃত্বেই এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে। ওখানে ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে বলব।’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫২
Share:

যুযুধান: (বাঁ দিকেআনিসুল ইসলাম। (ডান দিকে) অসিত চট্টোপাধ্যায়।

এনআরসি এবং নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকে ঘিরেও পান্ডুয়ায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রাস্তায় নেমে এল। পাশাপাশি পৃথক মঞ্চ বেঁধে শনিবার অবস্থানে বসলেন দুই বর্ষীয়ান নেতা— আনিসুল ইসলাম এবং অসিত চট্টোপাধ্যায়। দু’জনেরই দাবি, তিনিই দলের ব্লক সভাপতি। কে কোন নেতার সঙ্গে আন্দোলনে শামিল হবেন, তা নিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ শুরুতে দ্বিধায় পড়েন।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে ওই দলের অন্দরে। রহস্য ভাঙেনি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের কথাতেও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘নেত্রী যাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁর নেতৃত্বেই এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে। ওখানে ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে বলব।’’

আনিসুল পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। অসিত মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ। পান্ডুয়ার তেলিপাড়ায় জিটি রোড লাগোয়া জায়গায় এ দিন মঞ্চ বেঁধেছিল অসিত গোষ্ঠী। সেখানে তাঁর পাশে হাজির হয়েছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সভাপতি চম্পা হাজরা, পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাদশা আলম, রহিম নবি প্রমুখ। পাশের বলাগড় ব্লকের দলীয় সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসেছিলেন। মাত্র চারশো মিটার দূরেই মেলাতলায় জিটি রোডের ধারে ছিল আনিসুল গোষ্ঠীর মঞ্চ। সেখানে দেখা গেল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ, জেলা পরিষদের সদস্য শিল্পা নন্দী, পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষচন্দ্র দাসদের। দু’টি মঞ্চের মাইক বাঁধা হয়েছিল মুখোমুখি। দু’টি কর্মসূচিই চলল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। দু’টি মঞ্চেই ব্যানারে লেখা ছিল ‘পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি’।

Advertisement

বেশ কয়েক বছর ধরে তৃণমূলের পান্ডুয়া ব্লক সভাপতি ছিলেন আনিসুল। অসিতের দাবি, গত ৯ অক্টোবর দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব তাঁকে ওই পদে নিযুক্ত করেছেন। অসিতের বক্তব্য, ‘‘এখন আমিই ব্লক সভাপতি। দলের নির্দেশেই আমি এই কর্মসূচি নিয়েছি।’’ অন্যদিকে আনিসুল বলেন, ‘‘দলের নির্দেশেই এই কর্মসূচি নিয়েছি। আমিই ব্লক সভাপতি। দল এই পদ থেকে আমাকে সরায়নি।’’

দুই নেতার কাজিয়ায় দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা পড়েছেন বিপাকে। পঞ্চায়েত স্তরের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘এক জনের কাছে গেলে অন্য জন রাগ করছেন। কী ফ্যাসাদে পড়লাম!’’ দলের এক কর্মী বলেন, ‘‘দু’পক্ষই চেষ্টা করেছে যাতে তাঁদের মাইকের আওয়াজ বেশি করে কানে পৌঁছয়। তাতে অবশ্য সমস্যা হয়েছে বেশি। ভাল ভাবে কিছুই শোনা যায়নি। বরং মানুষ বিরক্ত হয়েছেন।’’

দুই নেতার কাজিয়া কত দূর গড়ায়, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে শাসকদলের শিবিরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন