জ্বর আরামবাগেও, সাফাই শুরু রিষড়ায়

রিষড়ার পর আরামবাগ। হুগলির আরও একটি এলাকায় ছড়াচ্ছে জ্বরের প্রকোপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০০:০৮
Share:

প্রকোপ: রিষড়ার একটি কমিউনিটি টয়লেটের পাশের অবস্থা এমনই।

রিষড়ার পর আরামবাগ। হুগলির আরও একটি এলাকায় ছড়াচ্ছে জ্বরের প্রকোপ।

Advertisement

দিন কুড়ি ধরে আরামবাগ মহকুমায় জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। ভিড় বাড়ছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালেও। সোমবার দুপুর পর্যন্ত সেখানে ভর্তি হয়েছেন ১৬০ জন। অধিকাংশই শিশু। শয্যা খালি না-থাকায় ওয়ার্ডগুলির মেঝে, করিডরেও ঠাঁই রয়েছে রোগীদের।

হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর বলেন, “গড়ে প্রতিদিন একশোর বেশি জ্বরের রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। বেশিরভাগেরই জীবাণুঘটিত জ্বর। কিছু রোগীর রক্তের নমুনা আ্যালাইজা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কারও রক্তের নমুনায় ডেঙ্গি পাওয়া যায়নি।’’ হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সুব্রত ঘোষ বলেন, “শিশুদের বেশিরভাগই সাধারণ ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত। কয়েকজনেরছু টাইফয়েড এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে জ্বর হয়েছে। দিন পাঁচেকের চিকিৎসায় সকলে সুস্থও হয়ে উঠছে।”

Advertisement

আরামবাগ হাসপাতালে রোগীরা। নিজস্ব চিত্র

মহকুমা জুড়েই জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়েছে বলে বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মহকুমা হাসপাতাল ছাড়াও খানাকুল, পুরশুড়া, আরামবাগ এবং গোঘাটের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে প্রতিদিন ২০-৩০ জন করে জ্বরে আক্রান্ত বহির্বিভাগে দেখাতে আসছেন। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ দত্ত জানান, ঋতু পরিবর্তনের সময় এমন জ্বর অস্বাভাবিক নয়। স্বাস্থ্য দফতর সচেতন রয়েছে। মশাবাহিত রোগ নিয়ে লাগাতার সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে।

কয়েকদিন ধরে রিষড়ার বাগখাল এবং নবীনপল্লি এলাকাতেও জ্বর ছড়িয়েছে। হাসপাতালে আক্রান্তেরা ভর্তিও হচ্ছেন। সাফাই নিয়ে ক্ষোভ ছিল এলাকায়। বিষয়টি গোচরে আসতেই পুর-কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়েছেন। মশার লার্ভা মারার তেল, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়েছে। মশা মারতে কামান দাগাও চলছে। অনেকেই জানালেন, পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে খোঁজখবর নিয়ে গিয়েছেন। ওষুধ দেওয়া হয়েছে। বাড়ি এবং আশপাশ পরিষ্কার রাখা, জল জমতে না দেওয়ার ব্যাপারে সচেতন করা হয়েছে। ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি খাটাল রয়েছে। সেগুলিও পরিষ্কার রাখতে বলা হয়েছে।

জ্বরে আক্রান্তদের জন্য নিখরচায় রক্ত পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়েছে পুর-কর্তৃপক্ষের তরফে। পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র জানান, শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রবি এবং সোমবার মোট ১০ জনের রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছে। দি‌ন দশেক ধরে জ্বরে ভুগছেন বাগখালের একটি বন্ধ কারখানার শ্রমিক লাইনের বাসিন্দা মীনাদেবী। মাঝে পাঁচ দিন শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শনিবার বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু জ্বর সারেনি। তিনি জানান, হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু রিপোর্ট মেলেনি।

ওই শ্রমিক লাইনের অনেকেই জ্বরে ভুগছেন। কমলাদেবী রাও নামে এক মহিলা জানান, সপ্তাহ খানেক ধরে তাঁর জ্বর। সঙ্গে গায়ে-মাথায় যন্ত্রণা। সোমবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা। একটি কমিউনিটি টয়লেটের চৌহদ্দি দেখে বোঝা গেল, সাফাইয়ের বালাই নেই। যত্রতত্র নোংরা জল জমে। পাশে চৌবাচ্চায় ভরা জল। রাস্তার উপরেই ছোটদের শৌচকর্ম সারতেও দেখা গেল। কমিউনিটি টয়লেট পরিষ্কারের আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন