হোলির দিন তারস্বরে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় তেতে উঠল ভদ্রেশ্বরের পাইকপাড়া এলাকা। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চালনো ও পুলিশের উপরে পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছে। তবে ঘটনার রেশ গড়ায় মঙ্গলবারও। থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
গোলমালের সূত্রপাত সোমবার বিকেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, হোলি উপলক্ষে পাইকপাড়ায় তারস্বরে মাইক বাজানো হচ্ছিল। তেলেনিপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ এলাকায় গিয়ে মাইক বন্ধ করতে বলে। অভিযোগ, পুলিশ ফিরে যেতেই ফের মাইক বাজানো শুরু হয়। ফের পুলিশ যেতেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। তৃতীয়বার পুলিশ গিয়ে জোর করে বক্স-মাইক বন্ধ করে দেয়। অভিযোগ, তখন লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে বলে অভিযোগ। মহিলারাও তাতে সামিল হন। ওই ঘটনায় তিন পুলিশকর্মী জখম হন। এর পরেই পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে করে বলে অভিযোগ।
অভিযোগ ওঠে, পুলিশ কোনও বাছবিচার না করেই লাঠি চালাতে শুরু করে। তাতে দুই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং এক বৃদ্ধা-সহ বেশ কয়েক জন মহিলা জখম হয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে সিপিএম নেতা গৌতম সরকারের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দারা তেলেনিপাড়া ফাঁড়িতে স্মারকলিপি দেন। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিজেপির হুগলি জেলা সভাপতি এবং সহ-সভাপতি শ্যামল বসুর নেতৃত্বে কয়েকশো লোক ভদ্রেশ্বর থানা ঘেরাও করেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেক মহিলাও ছিলেন।
গোলমালের আশঙ্কায় থানার সামনে প্রচুর পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন করা হয়। থানার সামনে এক বিজেপি কর্মী ফোনে ছবি তুলছিলেন। পুলিশ তাঁর ফোন কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। তখন উপস্থিত অন্য কর্মী-সমর্থকেরা ক্ষোভে থানার ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। শেষে পুলিশ তাড়া করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিজেপি-র তরফে তেলেনিপাড়া ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পেশায় আইনজীবী ভাস্করবাবু বলেন, ‘‘দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ তাঁর অভিযোগ, এ দিন পুলিশের হাতে তিনি এবং শ্যামলবাবু জখম হয়েছেন। পুলিশের পাল্টা দাবি, এক বিক্ষোভকারী সার্কেল ইনস্পেক্টর (চন্দননগর) তপন চৌবের বুকে মারেন। লাঠি চালনোর অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ জানায়, বিজেপি-র দায়ের করা অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। আর সোমবারের ঘটনায় পুলিশের তরফে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আজ, বুধবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। মাইক বাজানোর ব্যাপারে বিধি নিষেধ আছে। সেই কারণে পুলিশ তা বন্ধ করতে যায়। তখন পুলিশের উপর হামলা হয়। কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না।’’