উত্তরপাড়া পুরসভার উদ্যোগ

দখলদার হটিয়ে শহরের গতি বাড়াতে ভরসা গুমটি

কোথাও নিকাশি নালাই চাপা পড়ে গিয়েছে গুমটির নীচে। কোথাও রাস্তার প্রায় অর্ধেকটাই দখলে চলে গিয়েছে তাদের। রুটি, চা, দুধ, স্টেশনারি, ফুল এমনকী জামা কাপড়ের পসরা নিয়ে বসা ওই সব গুমটি কার্যত মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তরপাড়া পুরসভার।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৭
Share:

এই সব গুমটিই বিলি করা হবে। ছবি: দীপঙ্কর দে।

কোথাও নিকাশি নালাই চাপা পড়ে গিয়েছে গুমটির নীচে। কোথাও রাস্তার প্রায় অর্ধেকটাই দখলে চলে গিয়েছে তাদের। রুটি, চা, দুধ, স্টেশনারি, ফুল এমনকী জামা কাপড়ের পসরা নিয়ে বসা ওই সব গুমটি কার্যত মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তরপাড়া পুরসভার।

Advertisement

যত্রতত্র গুমটির ফলে একদিকে যেমন শহরের যান চলাচল বাধা পাচ্ছে। তেমনই বহু ক্ষেত্রে শহরের নিকাশিও বিপর্যস্ত হচ্ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে আবর্জনার দূষণ। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে রাস্তা সংস্কার বা নিকাশির মতো কাজেও সমস্যা হচ্ছে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি। কারণ, বহু জায়গায় গুমটি এমন ভাবে তৈরি যে তা সরানো যায়নি। আবার কোথাও গুমটি সরাতে গেলে বিক্ষোভ-আন্দোলন হচ্ছে। কারণ তাঁদের রুটি-রুজিতে টান পড়ার আশঙ্কা। ফলে বাধা পাচ্ছে উন্নয়নের কাজ।

সমস্যা মেটাতে এবার পুর কর্তৃপক্ষ বিকল্প পথের কথা ভাবছেন। পুরসভার উদ্যোগেই শহরে রাস্তার উপযোগী নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি গুমটি নিয়ে আসা হয়েছে। যা সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরানো যাবে। গুমটির মালিক চাইলে ব্যবসার সময়ের পর তা সরিয়ে নিজের পচ্ছন্দসই নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন। ফলে কোথাও পুরসভার কাজের প্রয়োজনে গুমটি সরানোর দরকার হলে সমস্যা হবে না। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, কলকাতা পুরসভা বা বিধাননগর পুরসভার চৌহদ্দির বাইরে এই নতুন নকশার গুমটি রাজ্যে কোথাও নেই। কেএমডিএ-র থেকেই এই গুমটি নিয়ে আসা হয়েছে শহরের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে।

Advertisement

নতুন চেহারার গুমটি কেমন?

শক্তপোক্ত লোহার কাঠামোর উপর তৈরি ওই গুমটিতে বড় চাকা লাগানো আছে। তাই প্রয়োজনে গুমটি ঠেলে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। এতে যানজটও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। পুরসভার নিকাশি দফতরের এক কর্তা জানান, দেখা গিয়েছে অনেক সময় নিকাশি নালা পরিষ্কার করা জরুরি। কিন্তু নালার উপর গুমটি থাকায় তা করা যাচ্ছে না। তার উপর তার কাঠামো এমনভাবে তৈরি যে সরানোও সম্ভব নয়। এই সব অসুবিধা দূর করতেই এই বিকল্প ব্যবস্থা।

কিন্তু কী ভাবে নতুন ভাবে তৈরি এই সব গুমটি বিলি করা হবে?

পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, “এ ক্ষেত্রে পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পুরনো গুমটি সরাতে যে সব মালিক রাজি হবেন, তাঁরাই শুধু পুরসভার কাছে নতুন গুমটির জন্য আবেদন করতে পাবরেন। আবেদনের শর্ত হচ্ছে, পুরনো গুমটি সরিয়ে ফেলতে হবে।’’ তিনি আরও জানান, কেউ নতুন গুমটি নিয়ে গিয়ে পুরনো গুমটির পাশে বসালে পুর কর্তৃপক্ষ সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে।

পাশাপাশি উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর এলাকায় বহু জায়গা রয়েছে, যেখানে কোনও ব্যবসা হয় না। অথচ স্রেফ দখলদারি বজায় রাখতে গুমটি বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরপ্রধান বলেন, “বিষয়টি পুর কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় শহরে আর এ সব বরদাস্ত করা হবে না। যে গুমটিগুলোতে ব্যবসা হয় না, সেগুলি চিহ্নিত করে সরিয়ে ফেলা হবে।’’

পুর কর্তৃপক্ষের এই বিকল্প ব্যবস্থা শহরের উন্নয়নের কাজে কতটা সহায়ক হয়, সেটাই দেখার।a

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন