তোলাবাজদের তাণ্ডবে উত্তাল শালিমারের আবাসন

খোদ মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, তোলাবাজদের যেন টাকা দেওয়া না হয়! ২০১২ সালে একটি শিল্প প্রকল্পের শিলান্যাস করতে গিয়ে শিল্পপতিদের কাছে এই আবেদন রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, তোলাবাজির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে তাঁর সরকার। তার পরে কেটে গিয়ে ঠিক তিন বছর। কিন্তু, এ রাজ্যে তোলাবাজদের দাপট কমেছে, এমন কথা বলতে পারবেন না কেউ। বুধবার, ফের তোলাবাজদের দাপটের সাক্ষী হয়ে থাকল হাওড়ার শালিমার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৫ ১৭:৪৫
Share:

ভেঙে পড়ে রয়েছে অনিলবাবুদের বাইক। —নিজস্ব চিত্র।

খোদ মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, তোলাবাজদের যেন টাকা দেওয়া না হয়! ২০১২ সালে একটি শিল্প প্রকল্পের শিলান্যাস করতে গিয়ে শিল্পপতিদের কাছে এই আবেদন রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, তোলাবাজির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে তাঁর সরকার। তার পরে কেটে গিয়ে ঠিক তিন বছর। কিন্তু, এ রাজ্যে তোলাবাজদের দাপট কমেছে, এমন কথা বলতে পারবেন না কেউ। বুধবার, ফের তোলাবাজদের দাপটের সাক্ষী হয়ে থাকল হাওড়ার শালিমার। টাকা না পেয়ে রবীন্দ্রনগর আবাসনে ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চালাল ২০-২৫ জনের একটি দল।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন তোলাবাজদের একটি দল সশস্ত্র হামলা চালায় শালিমারের রবীন্দ্রনগর আবাসনে। পরিবহন-ব্যবসায়ী অনিল পাণ্ডের বাড়ির সামনে ঘণ্টাখানেক ধরে তাদের তাণ্ডব চলে। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ রবীন্দ্রনগর আবাসনে ঢুকে সবার প্রথমে তারা অনিলবাবু এবং তাঁর দুই ভাইয়ের মোটরসাইকেলগুলি ভাঙচুর করে। মোট তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙার পরে তারা হাজির হয় ফ্ল্যাটের তিনতলায়। শাবল দিয়ে তারা কোলাপসিবল গেট ভাঙার চেষ্টা করতে থাকে— অনেকটা উপড়েও আনে! অকথ্য গালাগালির পাশাপাশি তারা বোমা মেরে দরজা ভাঙার হুমকি দিতে থাকে। পাশাপাশি, বড় বড় ইট ছুড়ে ভেঙে ফেলে সিঁড়ির আলো।

ঘটনার সময় ফ্ল্যাটের ভিতরে অনিলবাবুরা তিন ভাই ছিলেন। ছিলেন তাঁদের মা বেবি পাণ্ডে এবং অনিলবাবুর স্ত্রী। বাড়ির বাচ্চারা এই সময় স্কুলে গিয়েছিল। বিপদ দেখে ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন অনিলবাবুরা। তাতে হামলার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। দরজা না খুললে তাঁরা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকবে এবং সবাইকে মেরে ফেলবে, এমন হুমকি দিতে থাকে। তাদের হুমকিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেবি পাণ্ডে। কিন্তু, দরজা ভাঙতে না পেরে ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চালিয়ে ব্যর্থ আক্রোশ নিয়েই ফিরে যায় তোলাবাজরা।

Advertisement

অনিলবাবুর অভিযোগ, তোলাবাজদের হামলার সময়েই ফোন করা হয়েছিল বটানিক্যাল গার্ডেন থানায়। কিন্তু, পুলিশ ঠিক সময়ে এসে পৌঁছয়নি। তোলাবাজরা চলে যাওয়ার পরে পুলিশ আসে।

অনিলবাবু আরও জানান, গত দেড় বছর ধরেই তোলাবাজদের ওই দলটি এলাকায় সক্রিয়। এই দেড় বছরে বেশ কয়েক বার তারা অনিলবাবুদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। এ বার মাত্রাতিরিক্ত টাকা চাওয়ায় অনিলবাবুরা তা দিতে অস্বীকার করেন। তার জেরেই বুধবার এই হামলা চালায় তোলাবাজদের দল।

ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন