রাজি নয় রাজ্য, ওয়ার্ডের পুনর্বিন্যাস হচ্ছে না হাওড়ায়

দলের এই দাবি মেনেই পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী রাজ্য সরকারের কাছে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস চেয়ে চিঠি দিয়েছিল।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৯ ০৫:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস চেয়ে হাওড়া পুরসভার পাঠানো প্রস্তাব খারিজ করে দিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি প্রশাসনের তরফে হাওড়া পুরসভা ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হাওড়ার ওয়ার্ডগুলির পুনর্বিন্যাস করা হবে না। কোনও ওয়ার্ডের সীমানারও পরিবর্তন হচ্ছে না। অর্থাৎ, বর্তমানে সাবেক বালি পুরসভাকে ধরে মোট যে ৬৬টি ওয়ার্ড রয়েছে, সেই সংখ্যার কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না এবং ওয়ার্ডের সীমানাও ছোট বা বড় করা হবে না। তবে প্রতিটি ওয়ার্ডেরই নম্বর পরিবর্তিত হবে। বালির দিক থেকেই এ বার হাওড়া পুরসভার ওয়ার্ডের গণনা শুরু হবে। শেষ হবে দক্ষিণ হাওড়ায়।

Advertisement

হাওড়া পুরসভায় তৃণমূল বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রাজ্য সরকার সেখানে পুরসভা পরিচালনার জন্য প্রশাসক নিয়োগ করে। পুর কমিশনারকেই পুর প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। পরবর্তীকালে পুর প্রশাসককে চেয়ারপার্সন করে পাঁচ সদস্যের একটি প্রশাসকমণ্ডলী গঠন করে দেয় রাজ্য। ওই প্রশাসকমণ্ডলীতে রয়েছেন হাওড়া থেকে নির্বাচিত তিন মন্ত্রী: অরূপ রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও লক্ষ্মীরতন শুক্ল। আছেন প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীও। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের গোড়া থেকেই জেলা তৃণমূলের তরফে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের দাবি তোলা হয়। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, আয়তন ও লোকসংখ্যার নিরিখে হাওড়ার ওয়ার্ডগুলির মধ্যে কোনও সমতা নেই। কোনও ওয়ার্ডে ১০ হাজার লোক বসবাস করেন, তো কোনও ওয়ার্ডে ৩০ হাজার। এ দিকে, নিয়ম অনুযায়ী ১০ হাজার লোকসংখ্যার ওয়ার্ডের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ হয়, সেই একই অর্থ বরাদ্দ হয় ৩০ হাজার লোকসংখ্যার ওয়ার্ডের জন্যও। যার ফলে সমস্ত ওয়ার্ড সমান ভাবে পুর পরিষেবা পায় না।

দলের এই দাবি মেনেই পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী রাজ্য সরকারের কাছে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। হাওড়া পুরসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘গত সপ্তাহেই ওই চিঠির উত্তর এসে পৌঁছেছে। তাতে পুরসভার ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও চিঠি দিয়েছে রাজ্য।’’

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, হাওড়ায় বর্তমানে যে ৬৬টি ওয়ার্ড আছে, তার মধ্যে সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলিতে জনসংখ্যা অন্যান্য ওয়ার্ডের তুলনায় প্রায় দু’তিন গুণ বেশি। আয়তনেও অনেক বড়। তাই ওই সব অঞ্চলে আজ পর্যন্ত পানীয় জল থেকে রাস্তাঘাট— কোনও কাজই ঠিক ভাবে করা যায়নি। ওই ধরনের ওয়ার্ডগুলির ক্ষেত্রেই সীমানা পুনর্বিন্যাস চেয়েছিল হাওড়া পুরসভা। কিন্তু রাজ্য তা মানতে চায়নি। এ ব্যাপারে রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক ও হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘পুরসভা প্রস্তাব দিয়েছিল। খারিজ করে দিলে কিছু বলার নেই।’’

প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। রাজ্য ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। কম ওয়ার্ড ছিল বলেই আমরা উন্নয়নের কাজ সমান ভাবে করতে পেরেছিলাম।’’ এ দিকে, পুনর্বিন্যাস না হলেও ওয়ার্ডের সংখ্যা বালি থেকে শুরু করতে হবে বলে রাজ্য নির্দেশ দিয়েছে। কারণ, এর আগে উত্তর হাওড়া থেকে হাওড়া পুরসভার এলাকা শুরু হওয়ায় সেখান থেকেই ১ নম্বর ওয়ার্ড শুরু হত। এখন যে হেতু হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডের সঙ্গে বালি পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে, তাই বালির দিক থেকেই এক নম্বর ওয়ার্ড শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন