দুধপুকুরের দূষণে আশঙ্কা প্রশাসনে

প্রয়াত বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টকে জানিয়েছিলেন, তারকেশ্বরের দুধপুকুর-সহ গোটা মন্দির চত্বর ভয়াবহ দূষণের কবলে। দুধপুকুর নিয়ে কাজ করা পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি সেই দূষণ ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ০১:৩৬
Share:

দূষিত: দুধপুকুর। নিজস্ব চিত্র

দুধপুকুরের দূষণ বাড়ছে। এর আগে সেখানে ভক্তদের স্নান বন্ধ করা-সহ একাধিক সুপারিশ করেছিলেন পরিবেশবিদেরা। তারকেশ্বর মন্দির চত্বরে অবস্থিত ওই পুকুরের দূষণ কমাতে বিশেষ প্ল্যান্ট বসিয়েছিল প্রশাসন। তাতে কাজও হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে সেই প্ল্যান্টটি তদারকির অভাবে খারাপ হয়ে গিয়েছে। সেটি আর সারানো হয়নি।

Advertisement

আজ, বৃহস্পতিবার তারকেশ্বরে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, তারকেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে তিনি প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেবেন। সেখানে দুধপুকুরের দূষণ নিয়ে কি কিছু বলবেন মুখ্যমন্ত্রী? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তারকেশ্বর মন্দিরের পরিচালন সমিতি এবং জেলা প্রশাসনের একাংশের মধ্যে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯৯৭-এ দুধপুকুরের জলের দূষণ নিয়ে রাজ্যে প্রথম হইচই শুরু হয়েছিল। তখন দেখা গিয়েছিল, ভক্তদের স্নান করা ও মন্দিরে শিবলিঙ্গের মাথায় ঢালা দুধ সরাসরি দুধপুকুরের জলে মেশায় দূষণ বাড়ছে। পরবর্তীকালে দুধপুকুরের জলের নমুনা সংগ্রহ করে দূষণের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। দুধপুকুরের জলে যে ক্ষতিকর জীবাণুর উপস্থিতি বেশি, তা বোঝা যায় তখনই। শ্রাবণী মেলা বা অন্য উৎসবের দিনে ওই পুকুরে জলদূষণের মাত্রা বাড়ে। এছাড়াও নিষেধ থাকলেও দুধপুকুরে স্নান, বাসন মাজা, জামা কাপড় কাচা চলছে অবাধে। সেখানেই ফেলা হচ্ছে পুজোর ফুল, বেলপাতা। সম্প্রতি সেই পুকুরে মাছ চাষেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই দূষিত জলই চরণামৃত হিসেবে বোতলবন্দি করে বিক্রি হচ্ছে মন্দির সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গায়।

Advertisement

প্রয়াত বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টকে জানিয়েছিলেন, তারকেশ্বরের দুধপুকুর-সহ গোটা মন্দির চত্বর ভয়াবহ দূষণের কবলে। দুধপুকুর নিয়ে কাজ করা পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি সেই দূষণ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। বাম আমলে দুধপুকুরের দূষণ রোধে যে বিশেষজ্ঞ কমিটি হয়েছিল তাতে ছিলেন পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি দুধপুকুরের দূষণের মাত্রা বুঝতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জল পরীক্ষা করেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, ওই পুকুরে দূষণের মাত্রা ফের বেড়ে গিয়েছে। জেলা জজের উদ্যোগে পরিকল্পনা নেওয়া হলেও বাস্তবায়িত হয়নি।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘দুধপুকুরকে দূষণমুক্ত করতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’\

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন